Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

মোবাইলে আত্মহত্যার ছবি সহকর্মীকে

মোবাইলে ভেসে উঠল এক সহকর্মীর ছবি। চোখের সামনেই তিনি পাতলা লম্বা তোয়ালে গলায় দিয়ে দোতলার সিঁড়ির রেলিং থেকে ঝুলে পড়লেন। ছটফট করতে করতে মৃত্যু হল প্রদীপ্ত পাইক (২৬) নামে ওই সহকর্মীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৩
Share: Save:

মোবাইলে ভেসে উঠল এক সহকর্মীর ছবি। চোখের সামনেই তিনি পাতলা লম্বা তোয়ালে গলায় দিয়ে দোতলার সিঁড়ির রেলিং থেকে ঝুলে পড়লেন। ছটফট করতে করতে মৃত্যু হল প্রদীপ্ত পাইক (২৬) নামে ওই সহকর্মীর।

ব্যাঙ্কে বসে কাজ করতে করতে মোবাইলে ১০ সেকেন্ডের এই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন দার্জিলিঙের এক তরুণী। চিৎকার করে উঠে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে সে কথা জানান। তাঁরা ছুটলেন প্রদীপ্তর বাড়িতে। কিন্তু ততক্ষণে প্রদীপ্তর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর একটা পা দেওয়ালে ঠেকে থাকলেও পুলিশের অনুমান, তিনি গলায় তোয়ালের ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যাই করেছেন। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ এই ঘটনার এক দিন পরেও প্রদীপ্তর ওই মহিলা সহকর্মীর আতঙ্ক কাটেনি।

বিবাহিত প্রদীপ্তর বাড়ি কলকাতার নাগেরবাজারে। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের দার্জিলিঙের একটি শাখায় কাজ করতেন। সেই শহরেরই ইয়েনসিংহ রোডে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। মঙ্গলবার তিনি ব্যাঙ্কে যাননি। শরীর খারাপ বলে বাড়িতেই ছিলেন।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্প্রতি তিনি নিজের মোবাইলে একটি অ্যাপ্লিকেশন যোগ করেছিলেন, যার মাধ্যমে ফোনের ক্যামেরায় কোনও ভিডিও তোলার সময় তা সরাসরি অন্য মোবাইলে পাঠিয়ে দেওয়া যায়। এই অ্যাপ্লিকেশনে ফোনের ক্যামেরা নির্দিষ্ট সময় ধরে কোনও দৃশ্য নির্দিষ্ট নম্বরের মোবাইলে পাঠিয়ে নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে তা রেকর্ডও হয়ে যায়। এই ভাবেই প্রদীপ্ত নিজের আত্মহত্যার দৃশ্য সরাসরি মহিলা সহকর্মীকে দেখিয়েছিলেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। পুলিশ প্রদীপ্তর মোবাইল উদ্ধার করেছে। ওই তরুণীর মোবাইল থেকেও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে।

বুধবার রাতে প্রদীপ্তর পরিবারের ৯ জন দার্জিলিঙে পৌঁছন। মৃতের মামা সৌমেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ভিডিও পাঠানোর কথা শুনেছি। তার মানে ওই মহিলার সঙ্গে প্রদীপ্তর দীর্ঘ দিন ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে এখনই আমরা কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কথা ভাবছি না।’’ দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘বিভিন্ন তথ্য উঠে আসছে। তবে ঠিক কী হয়েছে, তা তদন্ত শেষ না হলে বলা সম্ভব নয়।’’

প্রদীপ্তবাবুর শ্যালক অরিজিৎ পালের দাবি, মঙ্গলবার সকালে সাড়ে আটটা নাগাদ শেষ বার দমদমের বাড়িতে ফোন করেছিলেন তিনি। ফোন ধরেন অরিজিৎবাবুই। পরে স্ত্রীর সঙ্গে কথাও হয়। কী ভাবে ডাল রাঁধতে হয়, তা স্ত্রীর কাছে জানতে চান। এর পরে আর কোনও কথা হয়নি। ৮ অগস্ট তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। ১০ অগস্ট তাঁদের বিয়ের এক বছর হবে। একটি অনুষ্ঠানও হওয়ার কথা ছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

suicide coworker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy