বিমান বসু। ফাইল ছবি।
বিধানসভা ভোটে সিপিএমের প্রার্থী-তালিকায় দেখা গিয়েছিল এক ঝাঁক তরুণ মুখ। বাংলায় নির্বাচনে তাদের বিপর্যয় তাতে ঠেকানো যায়নি। আবার নতুন মুখকে সামনে রেখেই কেরলে নজির গড়ে পরপর দ্বিতীয় বার সরকারে ফিরেছে তারা। এ বার দলের শীর্ষ স্তরে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে দিয়ে সংগঠনে তারুণ্যের নীতিকে প্রাধান্য দিতে চাইছে সিপিএম। এই ভাবনা কার্যকর হলে কেন্দ্রীয় কমিটির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বিমান বসুর মতো প্রবীণ নেতাদের।
সিপিএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কেরলের কান্নুর শহরে, আগামী বছর এপ্রিলে। কেরলের সিপিএম যে ভাবে দলে ও সরকারে প্রজন্মের পরিবর্তন ঘটিয়ে সাফল্য ধরে রাখতে পেরেছে, সেই পথকে আসন্ন পার্টি কংগ্রেস থেকে সংগঠনেও কাজে লাগাতে চাইছে দল। তারই সম্ভাব্য সূত্র হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার জন্য বয়সের সীমা কমিয়ে আনতে চায় তারা। এখন ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য থাকতে পারেন। তার পরেও কারও ভূমিকা দলের কাছে খুব উল্লেখযোগ্য হলে তাঁকে আমন্ত্রিত সদস্য করে রাখা হয়। এ বার ওই ৮০ বছরের বয়ঃসীমা আরও কিছুটা কমিয়ে এনে ৭৫ করার কথা ভাবা হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে রবিবার এই বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। বিশদে আরও আলোচনা করে সাংগঠনিক রূপরেখা তৈরি হবে এবং তা পেশ হবে পার্টি কংগ্রেসে।
দলের পলিটবুরো সদস্য বিমানবাবু ৮০ পেরিয়েছেন। বয়সের নতুন নীতি কার্যকর হলে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে তাঁর মতো নেতাকে অব্যাহতি নিতে হবে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী ইতিমধ্যে প্রয়াত। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আগেই পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সক্রিয় থাকলে তাঁকেও সরে দাঁড়াতে হত। সিপিএমের বর্তমান পলিটবুরো সদস্যদের মধ্যে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এখন ৭৬, সে রাজ্যেরই এস রামচন্দ্রন পিল্লাই আরও প্রবীণ। নতুন নিয়ম বাস্তবিকই চালু করা গেলে ক্ষমতাসীন একমাত্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে ‘ছাড়’ দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরে। আবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলা থেকে নতুন কারা জায়গা পেতে পারেন, তা নিয়েও চর্চা রয়েছে।
পার্টি কংগ্রেসের জন্য দলের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্ট তৈরি করার প্রধান দায়িত্ব প্রকাশ কারাটের। আর দু’বছরের মধ্যে তিনিও ৭৫-এ পা দেবেন। তার পরেই আছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। পার্টি কংগ্রেসে নতুন কমিটি গড়ার সময়ে এঁদের ক্ষেত্রেই বা দলের কী অবস্থান হবে, তা-ও আলোচনার বিষয়। এই সব কারণেই নির্দিষ্ট কোনও সূত্র ঠিক করার আগে সব দিক নিয়ে দলে আরও আলোচনার কথা কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বলেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
ইয়েচুরি বরাবরই দলে তুলনামূলক ভাবে তরুণ অংশকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। তাঁর সওয়াল, দেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের গড় বয়স যেখানে ৪০-এর আশেপাশে, তখন সিপিএম অন্য পথে হাঁটতে পারে না! বাংলায় সিপিএম আগেই নিয়ম করেছে, রাজ্য কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্তির সময়ে কারও বয়স ৬০-এর বেশি হবে না। এক পলিটবুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘সংগঠনের নানা ধাপ পেরিয়ে যে হেতু সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কেন্দ্রীয় কমিটিতে যেতে হয়, সেখানে অন্তর্ভুক্তির বয়স কমানো কঠিন। তবে গোটা সংগঠনেই বিভিন্ন ভাবে গড় বয়স কমাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy