প্রতীকী ছবি।
নিজের বিয়ে নিজে ভেস্তে দেওয়ার তালিকায় নতুন সংযোজন হরিহরপাড়ার রিয়া খাতুন।
কয়েক বছর আগে কান্দির এক নাবালিকার জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন পরিবারের লোকজন। সেই নাবালিকা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে পুলিশের কাছে বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিল। মেয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই নাবালিকার বাবাকে গ্রেফতারও করেছিল। কান্দির ওই নাবালিকার অবশ্য হোমে থাকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে লালবাগের জুলেখা খাতুন নিজের বিয়ে নিজে ভেস্তে দেওয়ার পরে সরকারি হোমে থেকে পড়াশোনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে। এখন জুলেখা বহরমপুর গার্লস কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
জুলেখার মতো হরিহরপাড়ার রিয়াও পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু সে সব শুনতে নারাজ পরিবারের লোকজন। বহরমপুর থানার জীবননগরে মামার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চুপিসাড়ে বিয়ে দেওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বাবা-মা। সে কথা জানার পরেই শুক্রবার রিয়া তার বিয়ে ভেস্তে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে হরিহরপাড়ার কন্যাশ্রী প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর জাকিরন বিবিকে ফোন করেছিল। ফোনে জাকিরন জানতে পারেন— প্রদীপডাঙা গ্রামের রিয়া তাজপুর মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের লোকজন ওই নাবালিকার অমতে তার বিয়ের বন্দোবস্ত করেছে। মেয়ে যদিও পড়াশোনা করতে চায়। সে এখনই বিয়ে করতে রাজি নয়। কিন্তু তাতে সায় নেই বাবা-মায়ের।
এর পরেই জাকিরন কন্যাশ্রী যোদ্ধা খাদিজা খাতুন, সাহিনা খাতুনদের সঙ্গে নিয়ে পৌঁছন হরিহরপাড়া ব্লকে। নাবালিকার বিয়ের খবর জানানো হয় হরিহরপাড়া থানায়। এর পরেই নাবালিকার বাড়িতে হাজির হন জাকিরন ও ব্লকের কন্যাশ্রী যোদ্ধা টিমের সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ব্লক সমাজকল্যাণ আধিকারিক শ্যামসুন্দর মন্ডল ও হরিহরপাড়া থানার পুলিশ।
এ দিকে জাকিরন বিবি ও তাঁর সঙ্গে কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের দেখতে পেয়ে হাঁপ ছাড়ে ওই নাবালিকা। ওই নাবালিকার কথায়, ‘‘আমি পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। কিন্তু বাবা-মা জোর করে আমার বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছে। ওই বিয়েতে আমার মত নেই।’’ সে কথা জানার পরেই প্রশাসনের লোকজনকে লিখিত দিয়েছেন রিয়ার বাবা নারুল শেখ ও মা আসিয়া বিবি। পেশায় দিনমজুর নারুলা শেখ বলছেন, ‘‘আমি জানতাম না ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না। প্রশাসনের লোকজন বুঝিয়ে বলার পরেই লিখিত দিয়েছি যে ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেব না।’’
জাকিরন বিবি বলছেন, ‘‘আমরা এর পরে চলে আসার পরেই রিয়াকে তার বাবা-মা মারধর করে। সে কথা জানার পরেই রিয়াকে সঙ্গে করে নিয়ে আসি হরিহরপাড়া থানায়। রিয়া বাড়ি ফিরতে রাজি হয়নি। জেলা প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে শিশু সুরক্ষা দফতরের মাধ্যমে বহরমপুর শিলায়ন হোমে পৌঁছে দেওয়া হয় ওই নাবালিকাকে।’’
বিডিও পুর্নেন্দু সান্যাল বলছেন, ‘‘ওই নাবালিকার ইচ্ছে অনুযায়ী হোমে রাখা হয়েছে। পড়াশোনার ব্যাপারে সব ধরণের পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy