ফাইল চিত্র।
দূরত্বটা ভাষার। অগত্যা ওঁদের সঙ্গে ভাব বিনিময়ে ভরসা বলতে কাগজ-কলম কিংবা শুধুই অঙ্গভঙ্গি!
ওমিক্রনে আক্রান্ত সন্দেহে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি আছেন সাত ভিয়েতনামি নাবিক। ৭ জানুয়ারি বঙ্গোপসাগরে ঢুকেছিল ভিয়েতনামের এক জাহাজ। ডায়মন্ড হারবারের কাছে নোঙর করার পরে নিয়মানুযায়ী বোটে করে গিয়ে সেই জাহাজের সকলের আরটিপিসিআর পরীক্ষা করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। ওই সাত জন নাবিকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সেই দিনেই তাঁদের আইডি-তে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের আপাতত বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা নেই। সমস্যা শুধু একটাই। তা হল ভাষা।
ওমিক্রন সন্দেহভাজনদের ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে ওই সাত নাবিককে। আইডি-র বক্ষঃরোগ চিকিৎসক কৌশিক চৌধুরী বলেন, “ওঁদের সকলেরই অত্যন্ত মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তিন জনের রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। তবে উচ্চ রক্তচাপের পুরনো ইতিহাস তাঁদের নেই। মনে হচ্ছে, উদ্বেগে রক্তচাপ বেড়েছে। সকলেরই শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল।” আইডি সূত্রের খবর, ভর্তির পরে চিকিৎসকদের ইংরেজি কথাবার্তাও ওই নাবিকেরা বুঝতে পারছিলেন না। কোথা থেকে এসেছেন, কোথায় যাবেন— ইংরেজিতে এই সব প্রশ্ন শুনে তাঁরা পরস্পরের মুখের দিকে তাকাচ্ছিলেন। শেষে কাগজে ছবি এঁকে বা ইংরেজি ভাষায় লিখে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন চিকিৎসকেরা। অন্য কর্মীরা অঙ্গভঙ্গিতে কাজ সারছেন। একই ভাবে নিজের মনের ভাব ব্যক্ত করছেন ভিন্দেশি নাবিকেরাও।
স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, জাহাজের ক্যাপ্টেন সাত দিনের জন্য ওই নাবিকদের হাসপাতালে থাকার ছুটি মঞ্জুর করেছেন। সেই বিষয়েও উদ্বেগে আছেন নাবিকেরা। বিভিন্ন ভাবে ও ভঙ্গিমায় বার বার তাঁরা চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইছেন, কবে তাঁদের ছুটি দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, নতুন করে কোনও উপসর্গ দেখা না-দিলে সাত দিন পরে ছুটি দেওয়ার কথা। ওঁদের ক্ষেত্রেও হয়তো সেটাই করা হবে। সাত জনেরই লালারসের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেতে আরও দিন তিনেক লাগার কথা বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। তবে নতুন করে যদি সমস্যা হয় বা উপসর্গ দেখা দেয় কিংবা রিপোর্ট যদি নেগেটিভ না-আসে, তা হলে হাসপাতালের তরফে তা জানানো হবে স্বাস্থ্য দফতরকে। সেখান থেকে ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনের কাছে পুনরায় নোটিস পাঠিয়ে জানানো হবে, প্রয়োজনে আরও কয়েকটা দিন ওই নাবিকদের হাসপাতালে রাখতে হবে।
বাংলার খাওয়াদাওয়া নিয়ে অবশ্য তেমন আপত্তি করছেন না নাবিকেরা। তবে ভাত-ডাল-মাছ বা মাংস খুব যে পছন্দ করে খাচ্ছেন, তা-ও নয়। আইডি সূত্রের খবর, মৃদু উপসর্গ অনুযায়ী যে-কয়েকটি ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, তা খেতে তেমন অনীহা দেখাচ্ছেন না ওই নাবিকেরা। আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষ অণিমা হালদার বলেন, “ভাষাগত একটা সমস্যা তো হচ্ছেই। তবে আমরা লিখে, ভঙ্গিমার মাধ্যমে ওঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি। সাত দিন পরে ওঁদের আরও এক বার পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে। নেগেটিভ এলে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy