প্রতীকী ছবি।
এক জন যাচ্ছিল ফুটবল দল বাছাই শিবিরে, অন্য জন টিউশনে। সাতসকালের দুর্ঘটনা সব ওলটপালট করে দিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে লরি-ট্রেকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল দুই স্কুল পড়ুয়া-সহ চারজনের। রবিবার বনমালীপুরে গ্রামীণ সড়কে ওই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ২১ জন। মৃত এবং জখমরা সকলেই ট্রেকারের যাত্রী।
সকাল সওয়া ছ’টায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষ হতেই ট্রেকার থেকে ছিটকে পড়েন কয়েকজন। চারজন লরির চাকায় পিষে যান। মৃত সবিতা মাহাতো (৪৫), মহেশ্বর টুডু (২৮), উত্তম মাহাতো (১৬) এবং নবনীতা মাহাতো (১৫)— সকলেই এলাকার বাসিন্দা। নবনীতার বাড়ি বনমালীপুরে আর উত্তমের বইখণ্ডপুরে। উত্তম দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। আর নবনীতা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। এ দিন টিউশনে যাচ্ছিল নবনীতা আর উত্তম যাচ্ছিল ফুটবল শিবিরে।
শালবনি স্টেডিয়ামে একটি ক্লাবের ফুটবল দল গড়ার জন্য প্র্যাকটিস সেশন ছিল। শালবনির একাধিক ক্লাবের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলেছে উত্তম। বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। ওই ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা তথা মেদিনীপুর সদর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলছিলেন, “উত্তম ভাল খেলত। সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল।’’ বিকেলে যখন বাড়িতে ফিরল উত্তমের নিথর দেহ, বইখণ্ডপুরে তখন কান্নার রোল।
ভাঙাবাঁধ হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী নবনীতার গ্রামও শোকস্তব্ধ। বাবা কমলাকান্ত মাহাতো চাষবাস করেন। সামান্য জমি রয়েছে। দুই মেয়ে, এক ছেলের মধ্যে নবনীতা ছিল মেজো। হাসিখুশি মেয়েটার এই পরিণতি মানতে পারছেন না কেউই। স্থানীয় বাসিন্দা তথা শালবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অজয় মাহাতো বলছিলেন, ‘‘সেই ছোট থেকে ওকে দেখছি। এমন হবে ভাবিনি।’’
ওই রুটের ট্রেকারে সকালে বেশিরভাগ চাষিই থাকেন। আনাজ নিয়ে শালবনি স্টেশনে এসে ট্রেনে কেউ যান মেদিনীপুরে, কেউ খড়্গপুরে। ট্রেন ধরানোর তাড়ায় ট্রেকার বেপরোয়া ভাবে ছোটে। পুলিশ জেনেছে, লরি ও ট্রেকার দু’টোরই গতি বেশি ছিল। সকালে কুয়াশাও ছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, কুয়াশা এবং গাড়ির গতি বেশি থাকার কারণেই এই দুর্ঘটনা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy