সকাল সাতটা বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার গুমা রেল স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গুরুতর জখম অবস্থায় চাদর গায়ে কাঁপছিলেন এক যুবক। পাশ দিয়ে ব্যস্ত নিত্যযাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে চলে যাচ্ছেন ট্রেন ধরতে। কেউ মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে যুবককে দেখলেন ঠিকই, কিন্তু পরোয়া না করে নিজেদের গন্তব্যে চলে গেলেন। স্থানীয় দোকানদারেরাও ওই যুবককে দেখেও না দেখার ভান করলেন। গুমার স্টেশনমাস্টারের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ যখন বনগাঁ জিআরপি থানার ওসি তপজ্যোতি দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন, তত ক্ষণে ছেলেটি মারা গিয়েছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, সঠিক সময়ে ওই যুবককে হাসপাতালে পাঠাতে পারলে হয় তো তিনি বেঁচে যেতেন। চোখের সামনে এক যুবককে বিনা চিকিত্সায় মরতে দেখেও যাত্রী ও দোকানদারদের বিশেষ হেলদোল দেখা গেল না। কেন তাঁরা যুবকটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন না? কেউ কেউ পরে বললেন, “পুলিশি ঝামেলা থেকে এড়িয়ে থাকতেই আমরা দেহটির কাছে যায়নি। তা ছাড়া, চাদর মুড়ি দিয়ে ছিলেন ওই যুবক। ফলে তার অসুস্থতার বিষয়টি আমরা বুঝতে পারিনি।”
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম অরুণ হালদার (২২)। বছর পাঁচেক আগে তিনি বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসেছিলেন। ভিন রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। দিন ছ’য়েক আগে কাকার বাড়িতে এসেছিলেন। সোমবার কাকার কাছ থেকে দু’শো টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন। তারপর থেকে অরুণের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। দেহের পাশ থেকে পুলিশ একটি মোবাইল, ছোট মিউজিক সিস্টেম ও তাসের বাক্স উদ্ধার করেছে।
পুলিশের অনুমান, মারধরের ফলেই মারা গিয়েছেন অরুণ। জিআরপি একটি খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ওই যুবকের দেহ অ্যাসিড দিয়ে পোড়া ছিল। মুখে ক্ষত ছিল বলেও রেল পুলিশ জানায়। গুমার আদর্শপল্লির বাসিন্দা নীহার হালদার নামে এক ব্যক্তি দেহটি শনাক্ত করে জানান, দেহটি তাঁর ভাইপোর। কিন্তু তিনি দেহটি নিতে চাননি। পুলিশের কাছে অভিযোগও জানাতে চাননি। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy