শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে ডানলপের কর্তারা। ছবি: তাপস ঘোষ
হুগলির সাহাগঞ্জে কারখানার বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে শনিবার শ্রমিক-বিক্ষোভের মুখে পড়লেন ডানলপের তিন কর্তা। বকেয়া মেটানোর দাবিতে বেশ কয়েক জন শ্রমিক তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। পরে কারখানা ঘুরে ওই কর্তারা শ্রমিকদের দাবি এবং কারখানার বর্তমান অবস্থার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দেন।
এ দিন দুপুর বেলা ১টা নাগাদ ওই কারখানার এইচআর ম্যানেজার (ফিনান্স) সৌমিত্র ঘোষ দুই পদস্থ কর্তা তড়িৎ দত্ত এবং ইন্দ্রনীল দাসকে নিয়ে কারখানা পরিদর্শনে আসেন। কারখানার গেটে আগে থেকেই সিটু এবং আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বে জড়ো হয়েছিলেন বেশ কিছু শ্রমিক। তিন কর্তাকে ঘিরে আধ ঘণ্টা ধরে তাঁদের বিক্ষোভ চলে।
বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, নানা যন্ত্রাংশ এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চুরি যাওয়ায় কারখানা ফের চালু করা সম্ভব নয়। তিন কর্তার পরিদর্শনে তাঁদের কোনও উপকার হবে না। তাই তাঁরা বকেয়া মেটানোর দাবি তোলেন। তাঁদের প্রায় ১০.৬৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে শ্রমিকেরা আগেই জানিয়েছিলেন। এইচআর ম্যানেজার (ফিনান্স) সৌমিত্রবাবু বলেন, “শ্রমিকদের দাবি এবং কারখানার বর্তমান পরিস্থিতির কথা আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাব।”
ভারতের অন্যতম প্রাচীন টায়ার তৈরির কারখানা ডানলপ ২০১২ সালে শেষ বারের মতো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার পরে দফায় দফায় সরকার-কর্তৃপক্ষ বৈঠক হলেও কারখানার দরজা খোলেনি। গত বুধবার এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও এ নিয়ে কোনও ফয়সালা হয়নি। বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দিয়ে মালিকপক্ষ চারটি প্রস্তাব দেয় সরকারের কাছে। প্রথমত, স্থানীয় বাজার-দরে কারখানার কিছু জমি সরকারকে হস্তান্তর করতে পারে তারা। দ্বিতীয়ত, জমি বিক্রির অনুমতি দিক সরকার। তৃতীয়ত, শ্রমিক-সমবায়কে কিছু জমি হস্তান্তর করতে পারে সংস্থা। সমবায় তা বিক্রি করে বকেয়া মেটাতে পারে। চতুর্থত, জমি বন্ধক রেখে ডানলপকে ঋণ দিক রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। এ নিয়ে আগামী ৫ অগস্ট ফের বৈঠক হওয়ার কথা বলে সংস্থা জানিয়েছে।
তার আগে শনিবার তিন কর্তার কারখানা পরিদর্শনকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না শ্রমিকেরা। রামেশ্বর সিংহ নামে এক শ্রমিক বলেন, “আমরা চাই কারখানা চালু হোক। এই রকম পরিদর্শন অনেকবারই হয়েছে। কারখানা চালুর আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা যে তিমিরে ছিলাম, আজও সেই তিমিরেই রয়েছি।” সিটুর সাধারণ সম্পাদক বিতান চৌধুরী বলেন, “এখনও যা অবস্থা তাতে মনে হয় আর এই কারখানা চালু হবে না। কারণ এখন সংস্থা চালু করতে গেলে প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। তবে, শ্রমিকদের পাওনাটা মিটিয়ে দেওয়া দরকার।” একই মত আইএনটিটিইউসি নেতা আদেশ সিংহেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy