সামান্য বিশ্রাম। নিজস্ব চিত্র।
প্রস্তুতি ছিল জোরদার। ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু তারপরেও বনগাঁ শহরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সভায় তেমন ভিড় হল না। শুক্রবার স্থানীয় খেলাঘর মাঠে আয়োজিত ওই সভায় মেরে কেটে শ’পাঁচেক মানুষ হাজির ছিলেন। পথচলতি অনেকে স্রেফ কৌতুহলবশত দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁদের ধরেও সংখ্যাটা এর বেশি বাড়েনি। সামনেই বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে যা কংগ্রেসের কাছে খুব স্বস্তির হল না, বলাইবাহুল্য। সে কথা অবশ্য মুখে স্বীকার করছেন না নেতারা। বরং দীর্ঘ দিন বাদে বড় মাপের কোনও নেতা বনগাঁয় সভা করায় তাঁরা খুশি।
প্রদেশ সভাপতি হিসাবে এটাই ছিল বনগাঁয় অধীরবাবুর প্রথম সভা। স্বাভাবিক ভাবেই শহর কংগ্রেস নেতৃত্ব ওই কর্মী সভাকে জনসভায় পরিণত করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। গত কয়েক দিন ধরেই শহর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পথসভা, দেওয়াল লিখন, পোস্টার সেঁটে ও অটোতে মাইক বেঁধে প্রচার করা হচ্ছিল। যে মাঠে এ দিন সভা হল, সেই খেলাঘর মাঠের চার ভাগের এক ভাগে এ দিনের সভার আয়োজন হয়েছিল। রাস্তার কাছে মঞ্চ বাঁধা হয়। সকাল থেকেই কংগ্রেস কর্মীরা মাইকে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করে গিয়েছেন সভায় আসার জন্য। কিন্তু এত সবের পরেও মঞ্চের নীচে যত চেয়ার পাতা হয়েছিল, তা ভর্তি হয়নি।
এমনিতেই কিছু দিন আগে বনগাঁ পুরসভার পাঁচ কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শহরে কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল হয়েছে। ওই কাউন্সিলরেরাই মূলত কংগ্রেসের সভায় বা মিছিলের বেশির ভাগ লোক নিয়ে আসতেন। ফলে ওই পাঁচটি ওয়ার্ড থেকে লোক আনতে পারেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনকী, শহর কংগ্রেসের কয়েক জন নেতাকেও দেখা যায়নি। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর সাধন দাস। তিনি বলেন, “আমাকে ওই সভায় যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অনেককেই আমন্ত্রণ করা হয়নি। জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) অসিত মজুমদারও সভায় আসেননি। অসিতবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বনগাঁ শহর কংগ্রেস সভাপতি কৃষ্ণপদ চন্দ বলেন, “সকলকে এ দিনের সভায় আসার জন্য সকলেই আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। অসিতবাবুর কাছের কেউ অসুস্থ, সে কারণেই উনি আসতে পারেননি।”
অধীরবাবু এ দিন ঘণ্টাখানেক বক্তৃতা করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আপনি (মমতা) এখন চোরেদের রক্ষাকর্ত্রী। আপনি আর মানুষের রক্ষাকর্ত্রী নন। যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের সমর্থনে আপনি আন্দোলন করছেন।” বিজেপির সমালোচনা করে প্রদেশ সভাপতি বলেন, “বিজেপির মুখে এখন কালো টাকা ফিরিয়ে আনার কথা শোনা যায় না। একশো দিনের কাজের প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেবে বলেছিল। ওই সব কথা এখন বিজেপির মুখে শোনা যায় না।”
এ দিনের সভার শুরুতেই কৃষ্ণপদবাবু প্রদেশ সভাপতির কাছে অনুরোধ করে বলেন, “আপনি যদি বনগাঁর দিকে প্রত্যক্ষ নজর রাখেন, তা হলেই আমরা এখানে সংগঠন মজবুত করতে পারব।” এ দিনের সভায় যা লোক হয়েছে, তাতে অবশ্য প্রকাশ্যে সন্তুষ্টই জানিয়েছেন কৃষ্ণপদবাবু। তিনি বলেন, “বর্তমান সময়ে নানা ঘাত-প্রতিঘাত উপেক্ষা করে যে মানুষ হাজির হয়েছিলেন, তাতেই আমরা খুশি। অধীরবাবুও খুশি হয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy