কালীতলা-জীবনতলা রাস্তায় এ ভাবেই চলছে মেরামতির কাজ।
এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি, ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার গুরুত্বপূর্ণ তিনটি রাস্তা সংস্কারের। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সেই দাবি জানিয়েও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ দিকে আগামী ২৯ নভেম্বর জীবনতলায় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। তার আগে তড়িঘড়ি শুরু হয়েছে কালীতলা থেকে জীবনতলা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার বেহাল রাস্তায় ইট দিয়ে গর্ত বোজানোর কাজ। এই আচমকা তত্পরতায় উল্টে ক্ষোভই বেড়েছে স্থানীয় মানুষের। তাঁদের অভিযোগ, নেতার সভার জন্যই এত কিছু তোড়জোড়। আর স্থানীয় মানুষের চাহিদার কোনও দাম নেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা কবে সংস্কার হবে বা আদৌ হবে কিনা, তার কোনও ঠিক নেই। অভিষেক এই রাস্তা দিয়ে সভায় যাবেন বলেই এই জোড়াতালির কাজের ঘটা। অন্য দিকে, ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকার তালদি থেকে জীবনতলা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এবং ঢুঁড়ি থেকে জীবনতলা প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তায় পিচ উঠে বড় বড় গর্ত ডোবার আকার নিয়েছে। সে সব সংস্কারের কোনও নামগন্ধ নেই।
দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়া, চলাচলের অযোগ্য ওই রাস্তায় প্রতি নিয়ত অসুবিধায় পড়ছেন পথচারী থেকে গাড়ির চালক। প্রায় সমস্ত রকম সরকারি-বেসরকারি অফিস, থানা, ব্যাঙ্ক, স্কুল-কলেজ, বাজারের প্রয়োজনে এই বিধানসভা এলাকার মানুষকে জীবনতলায় আসতে হয়। সে ক্ষেত্রে এই এলাকার ওই তিনটি রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেষ কবে রাস্তাগুলি সংস্কার হয়েছিল, মনে করতে পারেন না এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা রমজান শেখ, মইদুল মোল্লা বলেন, “বাম আমলের শেষ দিকে রাস্তাগুলির সংস্কার হয়েছিল বোধ হয়। তারপর থেকে প্রশাসনের সব স্তরে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।” এক অটো চালক বলেন, “খারাপ রাস্তার জন্য প্রায়ই গাড়ি বিকল হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে যাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে গাড়ি বন্ধও রাখতে পারি না।”
বেহাল রাস্তায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা রোজ লেগেই রয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। তাঁদের কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলেন, “তবু মন্দের ভাল। মাঝে মাঝে যদি তৃণমূলের এ রকম সভা হয়, তা হলে অন্তত ইট দিয়ে হলেও গর্তগুলি বোজে। এমনিতে তো আর সারাইয়ের কাজ হয় না।” কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তোলেন, “সংস্কার না করে যদি ইট দিয়ে গর্ত বোজানোই স্থির হয়, তা হলে শুধু ওইটিই কেন? বাকি রাস্তাগুলি কী দোষ করল? তবে কি অভিষেক আসবেন বলেই ওই রাস্তা সারাইয়ে এত উঠে পড়ে লাগা?”
ক্যানিং-২ বিডিও সিরাজ ইব্রাহিম লাখানি বলেন, “ওই রাস্তায় ইট দিয়ে গর্ত বোজানো হচ্ছে বলে আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তবে তালদি-জীবনতলা রাস্তা সংস্কারের জন্য অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্র কাজ শুরু হবে।”
ক্যানিং-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকত মোল্লা বলেন, “রাস্তাগুলির সংস্কারের জন্য আমরা জেলা পরিষদে বারবার অনুরোধ করেছি। ওরাই আপাতত কালীতলা-জীবনতলা রাস্তা সারাই করছে।”
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধক্ষ্য আবু তাহের সর্দার বলেন, “জীবনতলার ওই তিনটি বেহাল রাস্তার কথা জানি। কিন্তু এই মুহূর্তে আর্থিক সুবিধা না থাকায় সংস্কার শুরু করা যাচ্ছে না। দ্রুত চেষ্টা করছি। কালীতলা-জীবনতলা রাস্তাটির অবস্থা সব থেকে শোচনীয় বলে আপাতত গর্ত বোজানো হচ্ছে। এর সঙ্গে জনসভার কোনও সম্পর্ক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy