মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলুড়ের অম্বিকা জুটমিলের সামনে হরেন মুখার্জি রোডে। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম দেবাশিস হালদার (৩৭)।
বর্ষবরণের রাতে চলছিল পিকনিক। সেখান থেকে কিছুটা দূরে পাড়ারই এক যুবককে কয়েক জন মারধর করছে খবর পেয়ে পিকনিক ফেলে ছুটে গিয়েছিলেন মামা ও ভাগ্নে। অভিযোগ, ওই গোলমালেই চাঙড়, ইট ও বাঁশ দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় ভাগ্নেকে। মারধরে অচৈতন্য হয়ে পড়েন মামাও।
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলুড়ের অম্বিকা জুটমিলের সামনে হরেন মুখার্জি রোডে। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম দেবাশিস হালদার (৩৭)। তাঁর স্ত্রী ও তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় ছয় যুবক সৌম্যজিৎ বারুই, বিনয়কুমার সাউ, অভিষেক সাউ, শ্রীধর পারিদা, অনির্বাণ সেন ও দেবব্রত সেনকে রাতেই গ্রেফতার করেছে বেলুড় থানা। তবে নিছকই গোলমাল থামাতে গিয়ে দেবাশিস খুন হলেন, না কি পুরনো কোনও শত্রুতা রয়েছে তা দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বেলুড় লালাবাবু সায়র রোডের বাসিন্দা দেবাশিসের ডেকরেটিংয়ের ব্যবসা ছিল। বাড়ি মেরামতির জন্য কয়েক মাস ধরে তিনি পরিবার নিয়ে পালঘাট লেনে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন। লালাবাবু সায়র রোডে মামার বাড়ির উল্টো দিকের গলিতে বর্ষবরণ উপলক্ষে পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন দেবাশিস। তাতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর কর্মচারী, কয়েক জন বন্ধু ও মামারা। মৃত যুবকের বড়মামা সনৎ হালদারের অভিযোগ, রাত ১১টা নাগাদ স্থানীয় এক যুবক এসে তাঁদের জানান, অম্বিকা জুটমিলের সামনে দেবাশিসের বন্ধু সিন্টু রায় ওরফে বুড়োকে মারধর করছে কয়েক জন। খবর শুনে বুড়োকে উদ্ধার করতে যান দেবাশিস ও সনৎ।
বুধবার সনৎ বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি, প্রায় কুড়ি জন মিলে বুড়ো এবং তাঁর এক বন্ধুকে মারছে। কোনও মতে ওই যুবকদের হাত থেকে বুড়োকে উদ্ধার করি। আচমকাই এক জন আমার বুকে পাথর দিয়ে আঘাত করতে জ্ঞান হারাই। পরে হাসপাতালে জ্ঞান ফিরলে জানতে পারি, ভাগ্নেকে ওরা খুন করেছে।’’ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই স্থানীয় দাসপাড়ার বাসিন্দা। কয়েক জন দেবাশিস ও সনতেরও পূর্ব পরিচিত।
পুলিশ জেনেছে, পুরনো একটি বিষয় নিয়ে বুড়োর এক বন্ধুর সঙ্গে বচসা বেধেছিল ওই যুবকদের। তাতেই তারা বুড়ো এবং তাঁর বন্ধুকে মারধর শুরু করে। সেই খবর পেয়েই এসেছিলেন দেবাশিস ও সনৎ। ওই যুবকেরা প্রথমে সনৎকে মারতে শুরু করে। মামাকে জ্ঞান হারাতে দেখে দেবাশিস এগিয়ে যেতে তাঁকেও মারধর করা হয়। বাঁশ, ইটের আঘাতে দেবাশিস লুটিয়ে পড়তেই কংক্রিটের চাঙড় দিয়ে তাঁর মাথা থেঁতলে দেয় ওই যুবকেরা। এর পরে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
মৃত যুবকের মামি সারথি হালদার জানান, খবর পেয়ে তাঁরা সকলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে দেবাশিস ও সনৎ। খবর পেয়ে বেলুড় থানা থেকে আসে বিশাল বাহিনী। রক্তাক্ত অবস্থায় মামা-ভাগ্নেকে ঘুসুড়ি জয়সওয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা দেবাশিসকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী নমিতা হালদার বলেন, ‘‘আমার ভাসুর কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। উনি খুবই মিশুকে ছিলেন। তার পরেও কেন ওঁকে এমন নৃশংস ভাবে খুন করা হল বুঝতে পারছি না।’’
তবে সনৎ জানিয়েছেন, অভিযুক্ত যুবকদের মধ্যে এক জনের সঙ্গে বছর তিনেক আগে দেবাশিসের বচসা হয়েছিল। সনৎ বলেন, ‘‘গঙ্গার ঘাটে এক তরুণ ও তরুণীকে বসে থাকতে দেখে আমরা চলে যেতে বলি। ওঁরা পরে আরও কয়েক জন যুবককে ডেকে আনেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের সঙ্গে দেবাশিসের বচসা হয়। সে-ই বর্ষবরণের রাতে মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছিল।’’ পুলিশ ওই যুবকেরও খোঁজ শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy