অ্যাসিড ছোড়ার দাগ রয়ে গিয়েছে দেওয়ালে। ইনসেটে, ধৃত সাজামাল। নিজস্ব চিত্র
প্রাক্তন স্ত্রীকে অ্যাসিড ছোড়ার পর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরে উস্তির ইয়ারপুর গ্রাম থেকে সাজামাল লস্কর ওরফে কচি নামে বছর চল্লিশের ওই যুবককে ধরা হয়। ধৃতকে ডায়মন্ড হারবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাসিড অক্রান্ত রিনা লায়লার মা ফরিদা বেওয়া সাজামালের বিরুদ্ধে সোমবার অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরেই গ্রেফতার হয় সে। সাজামাল কোথা থেকে অ্যাসিড কিনেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে তার বাড়ি থেকেই অ্যাসিড নিয়ে গিয়েছিল সাজামাল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ি আগে ফলতার বেলেডাঙ্গা গ্রামের রিনার সঙ্গে বিয়ে হয় ইয়ারপুরের সাজামালের। সাজামাল একটি রুটি কারখানায় কাজ করে। ওই দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক দেবে। ছোট মেয়ে পঞ্চম ও ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে বিভিন্ন কারণ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিবাদ শুরু হয়। রিনা একবার পঞ্চায়েত ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলতেন। এ নিয়ে সাজামাল অশান্তি শুরু করে। এমনকী ফোনে কথা বললেও সাজামাল মারধর করত বলে অভিযোগ।
রিনার পরিবারের দাবি, সাজামালের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে রিনা বাপের বাড়ি চলে আসেন। প্রায় এক বছর আগে তাঁদের ডিভোর্স হয়। ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরই কয়েকদিনের মধ্যেই সাজামাল দ্বিতীয় বিয়ে করে। ছেলেমেয়েরা তার সঙ্গেই থাকে। বাপের বাড়িতেই থাকতেন রিনা। ফরিদার অভিযোগ, সাজামাল একাধিকবার রিনাকে খুনের হুমকি দিয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ২২ জানুয়ারি বুধবার রাত ৯টা নাগাদ বাপের বাড়ির বারান্দা থেকে বেরিয়ে বাথরুমে যাচ্ছিলেন রিনা। অভিযোগ, সে সময় সাজামাল বাড়িতে ঢুকে অ্যাসিড ছোড়ে। রিনার মুখে ও সারা শরীরে অ্যাসিড লাগে। ওই অ্যাসিডই রিনাকে জোর করে খাওয়াতে যায় সাজামাল। হাত দিয়ে বাধা দিতে গেলে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায় সে। রিনার চিৎকারে তাঁর বৌদি ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে এলে তাঁদেরও অ্যাসিড ছুড়ে পালায় সাজামাল বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাসিড হামলা গুরুতর জখম রিনাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় বাণেশ্বরপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হযওয়ায় রাতেই পাঠানো হয় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে। পরে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রিনার হাতে তিনটি সেলাই পড়েছে। অ্যাসিডে শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁর বৌদি খইরুন বিবি ও ছেলেটির হাত-পায়ের কিছু অংশ অ্যাসিডে পুড়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy