রাজা চৌধুরী।
বড় কোনও অশান্তি ছাড়া বৃহস্পতিবার মোটামুটি নির্বিঘ্নেই ভোট মিটেছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভাটপাড়া থানার সামনে গুলিতে এক তরুণের মৃত্যু ঘিরে ফের আতঙ্ক ছড়াল এলাকায়। ওই ঘটনার পরে শুক্রবার সকালে থানার সামনে স্থানীয়েরা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগ মানেনি পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে তারা জানিয়েছে, ওই তরুণকে খুন করা হয়েছে, না কি এটি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রাজা চৌধুরী (১৯)। তাঁর বাড়ি ভাটপাড়া থানার পাশেই ২ নম্বর গলিতে। বৃহস্পতিবার রাতে থানার সামনে থেকে উদ্ধার হয় রাজার গুলিবিদ্ধ দেহ। বাইকে চেপে এসে ওই তরুণকে কেউ খুন করেছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ।
কমিশনারেটের ডিসি (উত্তর) অমরনাথ কে বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।’’ কেন ঘটনাটি তাঁদের আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে, সেই ব্যাখ্যা দিয়ে তদন্তকারীরা জানান, যে সময়ে ঘটনাটি ঘটে, তখন থানা চত্বরে পুলিশ ছাড়াও হাজির ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই এমন একটি জায়গায় কেউ বাইকে চেপে এসে কাউকে গুলি করে পালাবে, সেই সম্ভাবনা কম। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও গুলি করে খুন করার তেমন প্রমাণ মেলেনি। বরং যে ভাবে হাঁটু ভাঁজ হওয়া এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণের দেহ উদ্ধার হয়, তা দেখে তদন্তকারীদের ধারণা, ঘটনাটি আত্মহত্যা হলেও হতে পারে। আত্মহত্যার পিছনে পুলিশের আরও একটি যুক্তি হল, রাজার হাতে ব্লেড দিয়ে কাটার কয়েকটি পুরনো দাগ মিলেছে। তা দেখে পুলিশের অনুমান, ওই তরুণের আত্মহত্যা করার প্রবণতা ছিল। তবে ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পুলিশ ময়না-তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে। ওই তরুণের দেহের পাশ থেকে একটি ওয়ান শটার উদ্ধার হয়েছে। সেটিও ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
রাজার আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে এলাকায় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ওই তরুণের বোন রুবি চৌধুরী জানায়, তাঁর দাদা প্রতিদিনই খাওয়ার পরে বেরোতেন। রাত ২টো নাগাদ রুবি জানতে পারে, দাদা খুন হয়েছেন। সে জানিয়েছে, রাজা একটু রগচটা স্বভাবের ছিলেন। তার জেরে কারও সঙ্গে কিছু গোলমাল হওয়ায় রাজাকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
এলাকার লোকজনের দাবি, রাতে তাঁরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে পুলিশ রাজার পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে চায়। যদিও পুলিশ সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। রাজার হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার সকালে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ সেখানে লাঠি চালায়। যদিও পুলিশের দাবি, বিক্ষোভের নামে থানা ঘেরাও করা হয়েছিল। বার বার বলা সত্ত্বেও না সরায় বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, ডাকাতির একটি মামলায় গত মার্চে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজা। ফলে দুষ্কৃতীদের নিজস্ব গোলমালের জেরে তাঁকে মারা হয়েছে কি না, তা-ও তদন্তে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy