জলমগ্ন বসিরহাটের স্কুল। — নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে থই থই করছে জল। বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিলের অর্ধেক ডুবে সেই জলে। শৌচালয়েও জল জমে। ডুবে রয়েছে মিড ডে মিল রান্নার জায়গাও। গত এক মাস ধরে এমনই অবস্থা বসিরহাটের ভ্যাবলা এলাকার মোক্ষদা আদর্শ জিএসএফপি স্কুলে। পড়ুয়ার সংখ্যা ১২২। মেরেকেটে রোজ ১০-১২ জন হয়তো আসছে স্কুলে। তাদের নিয়ে দোতলায় তিনটে ঘরে চলছে ক্লাস। এক পাশে চলছে মিড ডে মিল রান্না। শিক্ষক-পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রতি বছরই বর্ষার সময় এমন দুর্ভোগ হয়। বসিরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুতই হবে সমস্যার সমাধান।
পড়ুয়ারা জানিয়েছে, গত এক মাস ধরে স্কুলে জল জমে রয়েছে। জল পচে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সাপ, পোকামাকড়। শৌচালয়ও জলের নীচে থাকায় শিক্ষক, শিক্ষিকা, পড়ুয়ারা তা ব্যবহার করতে পারছেন না। স্কুল প্রতি দিনই খোলা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিয়মিত স্কুলে আসছেন। একতলার শ্রেণিকক্ষগুলি আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই দোতলায় তিনটে ঘরে চলছে ছ’টি ক্লাস। গড়ে রোজ জনা আটেক পড়ুয়া ক্লাস করছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বাকিরা সাপের ভয়ে স্কুলে আসছে না। দোতলায় একটি শ্রেণিকক্ষের এক দিকে মিড ডে মিল রান্নার কাজ চলছে।
রাজদীপ দেবনাথ নামে এক ছাত্র বলে, ‘‘স্কুলে আসতে খুব ভয় হয়। জলে পড়ে যাই। সাপ, পোকামাকড় জলে ঘুরে বেড়ায়।’’ প্রধানশিক্ষক গোবিন্দপ্রসাদ দাস বলেন, ‘‘প্রতি বছর একই সমস্যা তৈরি হয়। স্কুলের ভিতর জল জমে যায়। তাতে সাপ ঘুরে বেড়ায়। আতঙ্কে অল্প কয়েক জন ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে আসে। যারা আসে তাদের দুটো ঘরে বসিয়ে একসঙ্গে ক্লাস করাতে হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা পুরপ্রধানকে জানিয়েছি কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না। ক্লাসরুমের মধ্যে সাপ, পোকামাকড় ঘুরে বেড়ায়।’’ স্কুলের শিক্ষিকা রিতা রায় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা কোন সাহসে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসতে বলব! স্কুলে ডেঙ্গির মশার ভয়। শৌচালয়ে যেতে পারে না ছাত্র-ছাত্রীরা। আমরাও যেতে পারি না। এই সমস্যা প্রতি বছরের। সমাধান কেউ করেন না।’’
এই বিষয়ে বসিরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান অদিতি মিত্র দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষা আগে দেখতে হবে। অতি দ্রুত ওই স্কুলটা যাতে উঁচু করা যায়, তার ব্যবস্থা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy