ব্যারাকপুরে খুনের ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত এলাকার ব্যবসায়ীরা। —ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে সোনার দোকানে ডাকাতি এবং খুনের ঘটনায় মোট ২ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথা জানালেন ডিসি (সেন্ট্রাল) আশিস মৌর্য। অন্য দিকে, এই ডাকাতি এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার ১২ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ডাকলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে একটি সোনার দোকানে হেলমেট মাথায় পরে কয়েক জন দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। বন্দুক দেখিয়ে লুটপাট শুরু করে তারা। ডাকাতিতে বাধা দিলে দোকানের মালিকের পুত্রকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক ডাকাত। পরে নীলাদ্রি সিংহ নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। গুলিতে আহত হন আরও দু’জন। তাঁদের ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। ভরসন্ধ্যায় জনবহুল এলাকায় অপরাধের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বার বার এমন অপরাধের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ এলাকার সাংসদ অর্জুন সিংহ। বিজেপির টিকিটে জয়ী হলেও তিনি আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। তাই ধারাবাহিক ভাবে পুলিশকে আক্রমণ করে তাঁর বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদলও। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পুলিশমন্ত্রী, সেখানে তাঁর পুলিশকে নিয়ে অর্জুনের এই মন্তব্য রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। এই রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যে ডাকাতির ঘটনায় মোট ২ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ডিসি সেন্ট্রাল জানিয়েছেন একটি বিশেষ দল গঠন করে তাঁরা তদন্ত চালাচ্ছিলেন। তিন জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছিল। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর হাওড়ার বাঁকড়া এবং বীরভূমের মুরারই থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম সফি খান এবং জমশেদ আনসারি। ডাকাতিতে বাধা পেয়েই এই খুন কি না, সেটা তদন্তের স্বার্থে এখনই জানাতে চায়নি পুলিশ। পাশাপাশি ধৃতেরা কোথাকার বাসিন্দা, সেটাও জানাতে রাজি নন তদন্তকারীরা।
অন্য দিকে, ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার ব্যারাকপুর এবং পলতায় ১২ ঘণ্টার জন্য সমস্ত সোনার দোকান বন্ধের ডাক দিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। উত্তর এবং দক্ষিণ আনন্দপুরীর ব্যবসায়ীরাও এই বন্ধে শামিল হয়েছেন। এ নিয়ে ব্যারাকপুর স্বর্ণ শিল্পী সমিতির প্রেসিডেন্ট গোবিন্দ পাল বলেন, ‘‘ব্যারাকপুর সিপি অফিস গিয়েছিলাম মৌন মিছিল করার অনুমতি নেওয়ার জন্য। টিটাগর থানা তাতে অনুমতি দিয়েছে। শনিবার বন্ধ ডেকেছি ব্যারাকপুর এবং পলতা এলাকায়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের সঙ্গে বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী এবং বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী বাঁচাও কমিটি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের দাবি, সমস্ত দোষীকে গ্রেফতার করতে হবে এবং এলাকার সবার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy