নিহত আজহার লস্করের (ইন সেটে) পরিবারের সদস্যরা, শুক্রবার বাসন্তীতে। নিজস্ব চিত্র। — নিজস্ব চিত্র।
ভোট-পর্বে রাজ্য জুড়ে বহু রক্ত ঝরেছে। প্রাণ গিয়েছে অনেকের। এখনও তার মাশুল গুনতে হচ্ছে বহু পরিবারকে। ৮ জুলাই ভোটের দিন মার খেয়েছিলেন আজহার লস্কর (৬২) নামে বাসন্তীর জ্যোতিষপুর পঞ্চায়েতের রাধারানিপুরের এক বৃদ্ধ। ২৪১ নম্বর বুথের সামনে তৃণমূল-আরএসপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জখম হন উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন তৃণমূল কর্মী আজহার। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল থেকে তাঁকে পাঠানো হয়ছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা চলে। দিন চারেক আগে বাড়ি ফিরেছিলেন। ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার তাঁকে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয়েছে আজহারের।
পরিবারের অভিযোগ, ব্যালট বাক্স লুটের চেষ্টা করছিল আরএসপি। বাধা দেন আজহার-সহ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী। তখনই দু’পক্ষের মারপিট বাধে। বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় আজহারকে। চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের নামে বাসন্তী থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল আগেই। তবে ধরা পড়েনি কেউ। পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে।
নিহতের ভাইপো আব্দুল্লাহ লস্কর বলেন, “আমরা তৃণমূল করি বলে ভোটের দিন হামলা হয়। আরএসপির লোকজন ব্যালট বাক্স লুট করতে এসেছিল। আমরা বাধা দিলে মারধর করে। দোষীদের শাস্তি চাই।” বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের কথায়, “ভোটের দিন আরএসপির হাত থেকে ব্যালট বাক্স বাঁচাতে গিয়েই হামলার শিকার হন আজহার। দীর্ঘ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন, কিন্তু শেষরক্ষা হল না।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর। তিনি বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। তবে এই ঘটনায় আরএসপি জড়িত নয়। ভোটের দিন তৃণমূলের লোকেরাই বুথে ঢুকে ব্যালট লুট করছিল, দেদার ছাপ্পা চলছিল। আজহারও সেই দলে ছিলেন। স্থানীয় মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুললে হাতাহাতি হয়।”
বাসন্তীরই উত্তর মোকামবেড়িয়া পঞ্চায়েতে দিন দু’য়েক আগে আরএসপির সমর্থন নিয়ে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। আজহারের মৃত্যুর ঘটনায় দু’পক্ষের বোঝাপড়ায় চিড় ধরবে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
সুভাষ বলেন, "তৃণমূলের সঙ্গে একটা নৈতিক দূরত্ব আছে এবং সেটা থাকবেও। পঞ্চায়েত গঠন করতে স্থানীয় মানুষ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে জোট করেছেন। দলের উচ্চ নেতৃত্বের কোনও নির্দেশ এই জোটের পক্ষে ছিল না।" অন্য দিকে, শ্যামলের কথায়, "এই মৃত্যুর ঘটনায় দোষীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু উত্তর মোকামবেড়িয়ার মানুষ তো কোনও দোষ করেননি। ফলে সেখানে কোনও প্রভাব পড়বে না।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy