—প্রতীকী চিত্র।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশমতো লোকসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনার যে সব এলাকায় (পুরসভা ও পঞ্চায়েত) খারাপ ফল হয়েছে, তার রিপোর্ট সংগ্রহ শুরু করল তৃণমূল। এর জেরে পঞ্চায়েত স্তর থেকে ব্লক বা শহরের সংগঠনের নানা স্তরে রদবদল হতে পারে বলে মনে করছেন জেলা নেতৃত্বের অনেকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, যাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। তিনি এ নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তিনি শুধু বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিতে বলেছেন। এর বাইরে আমি কিছু বলব না। রিপোর্ট পাওয়ার পরে শীর্ষ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।’’
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে রাজ্যের যে সব এলাকায় ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে দলের সাংগঠনিক ও জনপ্রতিনিধি স্তরে বদল করা হবে।
লোকসভা ভোটে উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। একমাত্র বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল হেরেছে। এই কেন্দ্রের অন্তর্গত কিছু পঞ্চায়েত এবং পুরসভায় তৃণমূলের ভরাডুবিও হয়েছে। বনগাঁ পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে সব ক’টিতেই বিজেপি এগিয়ে। গোবরডাঙা পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে মাত্র দু’টিতে।
বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল জিতলেও এখানকার তিনটি পুরসভার মধ্যে দু’টিতে তৃণমূল পিছিয়ে। বসিরহাট পুরসভার মোট ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ২০টি ওয়ার্ডে। বাদুড়িয়া পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। টাকি পুরসভায় মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৬। চারটিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বাকিগুলিতে বিজেপি।
বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল জয়ী হলেও পুর এলাকাগুলিতে তাদের ফল ভাল হয়নি। হাবড়া পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে সব ক’টিতে বিজেপি এগিয়ে। অশোকনগর-কল্যাণগড় এবং বারাসত পুরসভারও বেশিরভাগ ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। কেন শহরে তৃণমূলের ফল খারাপ হল তা নিয়ে দলের অন্দরে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকাও এখন আতশ কাচের তলায়।
জেলার এক প্রভাবশালী নেতার কথায়, ‘‘এমনও হতে পারে, কোনও পুরসভা বা পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ, কিন্তু প্রধান বা পুরপ্রধানের ভূমিকা সদর্থক ছিল। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কুর্সি বেঁচে যেতে পারে। আবার উল্টোটা হলে কুর্সি চলে যেতে পারে। সাংগঠনিক পদাধিকারীদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য হবে।’’
লোকসভা ভোটের আগেও দলের একাধিক সমীক্ষায় এই জেলার কিছু এলাকায় নাগরিক পরিষেবা, দুর্নীতি, অনিয়মের কথা নজরে এসেছিল জেলা নেতৃত্বের। এ বারের রিপোর্টে কী উঠে আসে, সেটাই দেখার। অনেকেই প্রমাদ গুনছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy