সাধন বাগচি
আদিবাসী মহিলাকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠল বাগদার এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই মহিলাকে রেলে গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই নেতা তাঁর কাছ থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। মহিলা চাকরি পাননি। টাকাও ফেরত পাননি।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত সাধন বাগচি বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। তিনি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সাধনের কথায়, ‘‘যে কেউ আদালতে অভিযোগ করতেই পারেন। তবে ওই মহিলাকে আমি চিনিও না। উনিও আমাকে চেনেন না। যদি ১০ টাকাও নিয়ে থাকি, তা প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’ সাধনের দাবি, ‘‘আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হয়েছে। আমি মহিলার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করছি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদার বাসিন্দা আরতি সর্দার ২৪ ফেব্রুয়ারি বনগাঁ মহকুমা আদালতে সাধন এবং লিলুফা শাহ নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে তাঁর দাবি, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাধন বাড়ি এসে টাকা নিয়ে যান। প্রতিশ্রুতি ছিল, এক বছরের মধ্যে চাকরি দেওয়া হবে। পরে চাকরি পাননি আরতি। টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আরতি জানিয়েছেন, টাকা ফেরত চাইতে গেলে অভিযুক্তেরা তাঁকে অপমান করেন। স্বামীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশে ৪ মার্চ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত অফিসার বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার জানান, তদন্ত চলছে। বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের চেয়ারম্যান তরুণ ঘোষ বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে।’’
এ দিকে, গোটা ঘটনায় বাগদায় শাসকদলের দলীয় কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল। আরতির স্বামী সঞ্জিত সর্দার তৃণমূলের বাগদা অঞ্চল সভাপতি। দলীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বাগদার একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সঞ্জিতের বিরুদ্ধেও এক ব্যক্তির কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কোলা গ্রামের বাসিন্দা দীনবন্ধু বিশ্বাস ২৭ জানুয়ারি থানায় অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, জমি সংক্রান্ত বিবাদ মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে সঞ্জিত টাকা নিয়েছিলেন। ওই মামলায় সঞ্জিত হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আদিবাসী মানুষের হয়ে আইনি লড়াই করে তাঁদের জবরদখল হওয়া অনেক জমি আমি ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার জন্য ওই ব্যক্তি আদিবাসীদের জমি দখল করতে না পেরে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন।’’
সম্প্রতি বাগদার এক নেতার বিরুদ্ধে স্কুলের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও উঠেছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন শাসকদলের নেতারা। লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরেও তাঁরা কোনও শিক্ষা নেননি। দিন কয়েক আগে পঞ্চায়েত সমিতির সভা চলাকালীন নেতারা মারপিটেও জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের দলীয় স্তরে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy