—ফাইল ছবি
তৃণমূল-বিজেপি শ্রমিকদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই অশান্তি বাধছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু চটকলে।
ভাটপাড়া জুটমিল, অ্যালায়েন্স জুটমিল, নফরচাঁদ জুটমিল, অকল্যান্ড, অ্যাংলো ইন্ডিয়া জুটমিল, জগদ্দল জুটমিল, গৌরীশঙ্কর জুটমিল, ওয়েভারলি জুটমিলে গত এক মাসে তৃণমূল এবং বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে অন্তত ২০ বার গোলমালের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। অকল্যান্ড জুটমিলে সংঘর্ষ হয়েছে চারবার। তার জেরে ওই চটকলে কর্মবিরতি পর্যন্ত হয়েছে।
ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যাম বলেন, ‘‘আমাদের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের ভয় দেখিয়ে জোর করে ওদের সংগঠনে যোগ দিতে বাধ্য করছে বিজেপি। রাজি না হলেই মারধর করা হচ্ছে। অনেকে ভয়ে যোগ দিচ্ছে। কেউ বাধা দিলে ওরা ঝামেলা করছে।’’
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের অভিযোগের কী দাম আছে? ওদের সংগঠনে ক’জন আছে? সকলেই ওদের ছেড়ে বিজেপির সংগঠনে যোগ দিয়েছে বলে তৃণূলের লোকজনই অশান্তি পাকাতে চাইছে।’’
জগদ্দলের এক চটকলের মালিক জানান, মাঝে মধ্যেই দু’পক্ষের গোলমাল বাধছে। তারপরেই কারখানর মধ্যে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হচ্ছে। তার ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চটকলে। ধাক্কা খাচ্ছে উৎপাদন। সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
অর্জুন সিংহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে লোকসভা ভোটে দিতে সাংসদ হয়েছেন। তারপর থেকেই শিল্পাঞ্চল জুড়ে অশান্তির পরিবেশ ঘণীভূত হয়। এক দিকে, ক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে আগ্রাসী বিজেপি। অন্য দিকে, পুরনো জমি ফিরে পাওয়ার জন্য মরিয়া তৃণমূল। একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খুন-জখম-বোমাবাজির জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ার মতো বহু এলাকায়।
ইদানীং সেই পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা হয়ে এসেছে। বিজেপির দখল নেওয়া একাধিক পুরসভায় দখল ফিরে পেয়েছে তৃণমূল। এ বার চটকলগুলিতে দুই দলের শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। শিল্পাঞ্চলে প্রায় সব চটকলেই তৃণমূলের সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র দখলেই রয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন। দীর্ঘ দিন ধরেই বিজেপির সংগঠনে কিছু না কিছু লোক ছিল। তবে এক সময় সব থেকে বেশি সদস্য ছিল বামেদের বেঙ্গল চটকল মজদুর ইউনিয়নের। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে এই সংগঠনে ধস নামে। একই ভাবে লোকসভা ভোটের পরে সদস্য সংখ্যা বেশ কিছুটা বাড়িয়ে শক্তি সঞ্চয় করেছে বিজেপির-র ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস)।
আর তারপরেই শুরু হয়েছে গোলমাল। বিজেপির লোকজন গায়ের জোরে ইউনিয়ন দখল করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। বিজেপির পাল্টা দাবি, রাজ্যে পালাবদল ঘটতে চলেছে বুঝে শ্রমিকেরা তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন। সেটাই চক্ষুশূল হয়েছে শাসক দলের শ্রমিক ইউনিয়নের।
এমনিতেই চটকলগুলির মালিকেরা অনেক দিন ধরেই লোকসানের কথা শুনিয়ে আসছেন। একাধিক চটকলে বহু বার সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়েছেন অনেকে। শ্রমিক ইউনিয়নের গোলমালের অজুহাতকে সামনে রেখে তাঁরা ব্যবসা থেকে হাত গুটিয়ে নেবেন না তো, সেই প্রশ্নও ঘুরছে শ্রমিকদের অনেকের মনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy