সাহায্যের-হাত: প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে সৌমিত্র। নিজস্ব চিত্র
চার বছর ধরে পেটের অসুখে ভুগছেন বছর চব্বিশের তরুণী প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল। গোসাবা থানার অন্তর্গত রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা তরুণী বেশ কিছু দিন ধরে ওষুধের অভাবে কষ্ট পাচ্ছিলেন। এক পরিচিত মারফত সেই খবর পেয়ে দিল্লিতে এক পরিচিতকে বিষয়টি জানান গোসাবার বালি ২ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সৌমিত্র মণ্ডল। কলকাতার এক বন্ধুকেও জানান তিনি। তাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাদের কাছ থেকে সাহায্য আসতেই তরুণীর জন্য ওষুধ কিনে প্রায় দু’ঘণ্টা বৃষ্টির মধ্যে সাইকেল চালিয়ে বুধবার সকালে তা প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিলেন সৌমিত্র।
তরুণীর পরিবারটির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রিয়াঙ্কার মলদ্বার থেকে ক্রমাগত রক্ত পড়ে। চিকিৎসার জন্য দু’বার চেন্নাইয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, যত দিন বাঁচবেন তাঁকে এই অসুখ সঙ্গে করে নিয়েই বাঁচতে হবে। প্রিয়াঙ্কার মা অর্চনা দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীরোগে আক্রান্ত। একমাত্র ভাই সন্দীপ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগে। বাবা সুশান্ত মেদিনীপুরে হিমঘরে কাজে গিয়ে চর্মরোগে আক্রান্ত হন।
প্রিয়াঙ্কার চিকিৎসার জন্য গোটা পরিবারই ভিন্ রাজ্য ও ভিন্ জেলায় কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে সকলেই ফিরে এসেছেন। রোজগার বন্ধ। সংসার চলছে না। কোনও মতে রেশনের চাল দিয়ে দু’মুঠো ভাত জুটছে। এর মধ্যে প্রতিমাসে পাঁচ-সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার ওষুধ প্রিয়াঙ্কার জন্য কেনা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিল।
প্রিয়াঙ্কার এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন সৌমিত্র। তিনি নিজে বেকার। টাকা দিয়ে সাহায্য করবেন কাউকে, সেই অবস্থা নেই। তবু যেটুকু ছিল, তা দিয়ে আমপানে বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কলকাতার এক বন্ধু ও দিল্লির এক পরিচিত বাঙালির কাছে প্রিয়াঙ্কার জন্য সাহায্য চান। টাকা এসেছে অ্যাকাউন্টে। মঙ্গলবারই কলকাতা থেকে প্রিয়াঙ্কার যাবতীয় ওষুধ কিনে আনেন সৌমিত্র। বুধবার সকালে নিজের বাড়ি থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা বৃষ্টির মধ্যে সাইকেল চালিয়ে সেই ওষুধ তরুণীর হাতে পৌঁছে দেন।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ওষুধের অভাবে খুব কষ্ট পেয়েছি। এ ভাবে যে ওষুধ জোগাড় হবে ভাবতে পারিনি।’’ আর সৌমিত্র বলেন, ‘‘এ মাসটা তো কোনও রকম ওষুধ জোগাড় করলাম। জানি না আগামী মাসে কী হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy