মদের দোকান বন্ধের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন শিক্ষক-পড়ুয়ারা।
শনিবার সকাল ১১টা থেকে চাঁদপাড়া বাজার এলাকায় যশোর রোডে অবরোধ শুরু হয়। হাতে প্ল্যার্কাড-পোস্টার নিয়ে কিশোরী পড়ুয়ারা রাস্তায় বসে পড়ে। খবর পেয়ে গাইঘাটা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। শিক্ষক ও পড়ুয়ারা জানান, মদের দোকানটি বন্ধ না করলে এই অবরোধ উঠবে না। ওসি এসে দোকান বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ ওঠে। পুলিশের সামনেই কিশোরীরা মদের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার বলেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় মদের দোকানটি আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আবগারি দফতরের কাছে মদের দোকানটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আবেদন করা হয়েছে।’’
সম্প্রতি গাইঘাটা ব্লকের প্রাণকেন্দ্র চাঁদপাড়া বাজার এলাকায় চালু হয়েছে একটি দেশি-বিদেশি মদের দোকান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি অনুমতি নিয়েই দোকানটি চালু হয়। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি, দোকান চালু হলে পরিবেশ নষ্ট হবে। সে কারণে দোকানটি চালু হওয়ার আগে থেকে এলাকার মানুষ একজোট হয়ে বিরোধিতা শুরু করেছিলেন। পুলিশ-প্রশাসন, আবগারি-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তাঁরা দোকানটি চালু না হওয়ার আবেদনও করেন। কিন্তু তারপরেও দোকান চালু হয়।
হাল ছাড়েননি বাসিন্দারা। আরও বেশি মানুষ যাতে প্রতিবাদে সামিল হন, সে জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় জনমত সংগঠিত করার কাজ শুরু হয়। প্রতিবাদ সভা করা হয়। মানুষকে সচেতন করার কাজও শুরু হয়।
এ দিন অবরোধে সামিল হওয়া কয়েকজন মহিলা বলেন, ‘‘এখানে মদের দোকান পাকাপাকি ভাবে চালু হয়ে গেলে আমাদের সংসারের উপরে তার প্রভাব পড়বে। স্বামীরা মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে অশান্তি করবে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া নষ্ট হবে।’’ মহিলাদের আশঙ্কা, বড়দের নেশা করতে দেখে ছোট ছেলেরাও এই শিখবে। তাদের ভবিষ্যতের স্বার্থে মদের দোকান করতে দেওয়া হবে না। পাপড়ি মণ্ডল নামে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘আমরা স্কুল ও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাই। মদের দোকান হলে বাইরের লোকজনের আনাগোনা বাড়বে। মাতলামি করবে। আমরা নির্ভয়ে আর যাতায়াত করতে পারব না।’’ যে সব প্ল্যাকার্ড বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল, তাতে কোথাও লেখা, ‘মদ চাই না শিক্ষা চাই।’ কোথাও লেখা, ‘মা-বোনেরা দিচ্ছে ডাক, মদের দোকান নিপাত যাক।’
চৈতালি কুণ্ডু নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘প্রয়োজনে ঝাঁটা মেরে দোকান বন্ধ করে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy