কাজে যোগ দেওয়ার আগে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
সরকারি নির্দেশ মতো সোমবার থেকে বহু সরকারি-বেসরকারি অফিস, শপিং মল খুলে গিয়েছে। জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে বানতলা চর্মনগরীতেও। তবে বাইরের বহু শ্রমিক এখনও কাজে যোগ দিতে পারেননি। পর্যাপ্ত বাস না থাকায় স্থানীয় শ্রমিকদেরও কর্মক্ষেত্রে পৌঁছতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কর্মী সঙ্কটের জেরে সমস্যায় পড়ছেন ট্যানারি মালিকরা।
বানতলা চর্মনগরীতে সব মিলিয়ে চারশোর উপর চামড়ার কারখানা রয়েছে। সেখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে তিন লক্ষেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের অনেকেই বিহার, উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্য রাজ্য থেকে আসেন। লকডাউন চলাকালীন ভিন রাজ্যের বেশির ভাগ শ্রমিক তাঁদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। ট্রেন চালু না হওয়ায় ওই সব শ্রমিকদের বেশির ভাগই চর্মনগরীতে কাজে যোগ দিতে পারেননি। তবে চর্মনগরী লাগোয়া তাড়দহ, ভাঙড়, পাগলাহাট, বড়ালি-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকরা কাজে আসা শুরু করেছেন।
তবে এ দিন কাজে যোগ দিতে গিয়ে রীতিমত সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে জানান তাঁরা। অভিযোগ, কিছু সরকারি-বেসরকারি বাস চলছে ঠিকই। কিন্তু বানতলা চর্মনগরীতে যাওয়ার অধিকাংশ রুটের বাস এখনও ঠিক মতো চালু হয়নি।
যে সমস্ত রুটে বাস চালু হয়েছে, সেখানেও এক ঘণ্টা পর পর বাস চলছে। ভাড়াও বেশি নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই এ দিন সাইকেল চালিয়ে কাজে আসেন। বাস না পেয়ে রিকশা, টোটো করেও কাজে আসেন কিছু শ্রমিক।
ভাঙড়ের বাসিন্দা শম্ভু মণ্ডল, মুজিবর মোল্লারা এ দিন সাইকেল নিয়ে বেশ কয়েক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে চর্মনগরীতে কাজে যান। তাঁদের কথায়, “ঘটকপুকুর থেকে ২১৩ নম্বর বাসে চর্মনগরীতে কাজে যেতাম। একে বাসের সংখ্যা কম, তার উপর যে পরিমাণ ভাড়া চাইছে তাতে আমাদের মতো গরিব শ্রমিকদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে সাইকেলে করে কাজে যেতে হচ্ছে।”
২১৩ নম্বর বাস ইউনিয়নের সম্পাদক ইয়াদ আলি মোল্লা বলেন, “আমাদের রুটে প্রায় ৫০টি বাস চলে। দীর্ঘদিন ধরে বাস বসে থাকার কারণে অনেক গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই সব গাড়ি রাস্তায় নামানো সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে এদিন দু’টি রুটে মোট ২২টি বাস চালানো
সম্ভব হয়েছে।”
বানতলা চর্মনগরীর ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি সমস্ত নির্দেশ মেনে কর্মীদের কাজে আসতে বলা হয়েছে। কারখানাগুলিতে শারীরিক দূরুত্ব মেনে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। কর্মীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করে এবং হাত স্যানিটাইজ করে কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
কর্মীদের জন্য আলাদা তিনটে গেট করা হয়েছে। বাসন্তী হাইওয়ে থেকে কারখানায় যাওয়ার জন্য ৬টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে শ্রমিকদের জন্য।
বানতলা চর্মনগরীর ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি জিয়া নাফিস বলেন, “সরকারি সমস্ত নির্দেশ মেনে কারখানা চালু করা হয়েছে। কিছু কর্মীর সমস্যা রয়েছে। যে সমস্ত কর্মীদের কাজে আসতে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy