Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Hingalganj

জোটে না পাখার হাওয়াও

সন্দেশখালি ২ ব্লকের দ্বারিরজাঙ্গাল বনমালী বিদ্যাভবন সূত্রের খবর, স্কুলের ৬টি ক্লাস ঘরে গড়ে তিনটি করে পাখা।

একটি মাত্র পাখা গোটা ক্লাসে। সন্দেশখালির একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

একটি মাত্র পাখা গোটা ক্লাসে। সন্দেশখালির একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৫
Share: Save:

ক্লাসঘরে ফ্যান আছে, তবে সংখ্যায় কম। সকলের মাথায় সে হাওয়া পৌঁছয় না। কোথাও গোটা ক্লাস ঘরে একটাই ফ্যান। গরমে ক্লাস করতে গিয়ে হাঁসফাঁস করছে পড়ুয়ারা। এই চিত্র হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি ব্লকের বহু স্কুলে।

সন্দেশখালি ২ ব্লকের দ্বারিরজাঙ্গাল বনমালী বিদ্যাভবন সূত্রের খবর, স্কুলের ৬টি ক্লাস ঘরে গড়ে তিনটি করে পাখা। শিক্ষকের বসার জায়গায় একটি, আর দুই সারির পড়ুয়াদের দিকে একটি করে। পাখার কাছাকাছি বেঞ্চে বসা পড়ুয়ারা ছাড়া সারা ক্লাসঘরে হাওয়া পৌঁছয় না বললেই চলে। গরমে কষ্ট পায় ছেলেমেেরা।

ওই স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া মুনমুন বর, রিয়া পাত্রদের কথায়, ‘‘দোতলার ঘরগুলিতে টানা রোদ পড়ে। এ দিকে, পাখাগুলো ঘুরতেই চায় না। গরমে ঘেমে একসা সকলে। পাখাগুলি সারানো দরকার। নতুন কিছু পাখা লাগালেও ভালহয়।’’

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাধন সরকার বলেন, ‘‘এখন যে পাখাগুলি রয়েছে, সেগুলি ১০ বছর আগে এক শিক্ষক দান করেছিলেন। তারপর আর সংস্কার হয়নি। স্কুলের কোষাগারে পাখা মেরামত করার মতো টাকাও নেই। গরমে খুব সমস্যা হচ্ছে।’’

হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের পশ্চিম পুকুরিয়া ভবানী এফপি স্কুলের ৩টি ঘরে একটি করে পাখা রয়েছে। সেগুলিও ভাল করে ঘোরে না। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপক পাত্র বলেন, ‘‘গরমে কষ্ট হয় পড়ুয়াদের। হাওয়া তেমন লাগে না গায়ে। প্রতিটা ঘরে দুটো করে পাখা হলে ভাল হয়।’’

বিশপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্রটাও একই রকম। বিশপুর নব আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব ক্লাস ঘরেই একটা করে পাখা রয়েছে। বৃতী সর্দার নামে স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘‘পাখার হাওয়া ভাল করে গায়ে লাগে না। ক্লাসে আর একটা করে পাখা হলে ভাল হয়।’’

হাসনাবাদ ব্লকের বরুণহাট হাইস্কুলের ঘরগুলিতে গড়ে দু’টি করে পাখা। স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, আরও প্রায় ৩০টি পাখা লাগানো দরকার। সন্দেশখালি ১ ব্লকের ছোট শেয়ারা হাইস্কুল সূত্রের খবর, স্কুলে ৮ জন মাত্র স্থায়ী শিক্ষক। পড়ুয়ার সংখ্যা ১১৯৩ জন। বিভিন্ন ক্লাসের বিভাগ ভাগ করে আলাদা ঘরে বসানো যায় না। প্রায়ই দু’টি বিভাগের পড়ুয়াদের এক সঙ্গে বসাতে হয়। পাখা অপর্যাপ্ত হওয়ায় গরমে কষ্ট পাচ্ছে তারা।

হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রূপমারি হাইস্কুলে ৩৫০ জন পড়ুয়া রয়েছে। ওই স্কুলে কোনও কোনও ঘরে পাখাই নেই। অন্যান্য ঘরে ১টি করে পাখা রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, আরও অন্তত ১৫টি পাখা হলে গরমে স্বস্তি পাবে পড়ুয়ারা। গোবিন্দকাটি শিক্ষানিকেতনেও ক্লাসগুলিতে শতাধিক পড়ুয়া এক সঙ্গে বসে। অথচ পাখা রয়েছে এক বা দু’টি।

সন্দেশখালি ২ ব্লকের স্কুল পরিদর্শক নবকুমার রায় জানান, প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রে ২০১২ সাল নাগাদ ফ্যান কেনার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনও সরকারি অর্থ বরাদ্দ হয়নি। প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যার ভিত্তিতে প্রত্যেক বছর যে ‘কম্পোজিট গ্রান্ড’ আসে, তা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ফ্যান কেনা যায়। হাইস্কুলে ডেভলপমেন্ট ফান্ড থেকে স্কুল পরিচালন কমিটির অনুমতির ভিত্তিতে ফ্যান কেনা যেতে পারে।

গোবিন্দকাটি শিক্ষা নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশিসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ডেভেলপমেন্ট ফান্ড হয় ছাত্র ভর্তির টাকা থেকে। ভর্তির জন্য ২৪০ টাকার বেশি নেওয়া যায় না। এ দিকে, শিক্ষকের পদ খালি থাকায় ৬ জন পার্শ্বশিক্ষক রাখতে হয়েছে। প্রত্যেক মাসে ১২,০০০ টাকা সেখানেই চলে যায়। কম্পোজিট গ্রান্ডের টাকাও বিভিন্ন খাতে খরচ করতে হয়। তাই সব প্রয়োজন মেটানো কঠিন হয়ে যায়।’’

হিঙ্গলগঞ্জের দুর্গাপুর বায়লানি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরকুমার মান্না জানালে, পাখার জন্য সরকারি টাকা আসে না। স্কুলের ডেভলপমেন্ট ফান্ডেও খুব বেশি টাকা নেই। তবু সেই ফান্ড থেকে কয়েকটি পাখা লাগানো হয়েছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Hingalganj summer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy