সাগরদ্বীপের প্রত্যন্ত এলাকা। এই সমস্ত এলাকার পড়ুয়ারাই চিন্তায় পড়েছেন। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল কলেজ। এই পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন চালু রাখতে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু স্মার্ট ফোন না থাকার কারণে অনেকেই অনলাইন পড়াশোনা করতে পারছিল না। তাদের কথা ভেবে সম্প্রতি রাজ্য সরকার ট্যাব দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এতে খুশি হয়েছে পড়ুয়ারা। কিন্তু তারা চিন্তিতও। কারণ, গ্রামে বেশির ভাগ জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল। হাতে ট্যাব পেলেও ক্লাস করতে পারবে তো তারা? এই প্রশ্নই মাথায় ঘুরছে তাদের।
সুন্দরবন এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ পেতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে। অনলাইনে ইউনিভার্সিটি ও বোর্ডের পরীক্ষা দিতে গিয়েও ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের। তবে এত কিছুর পরেও ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই মনে করছে ট্যাব পাওয়ার পরে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে অনেকটাই সুবিধা হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গোসাবা ও বাসন্তী ব্লক সহ প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন দ্বীপে আজও ইন্টারনেট সংযোগ খুবই দুর্বল। অধিকাংশ সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না দ্বীপ অঞ্চলগুলিতে। বিশেষ করে গোসাবা ব্লকের কুমিরমারি, আমতলি, সাতজেলিয়া, লাহিড়িপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ খুবই খারাপ। গোসাবার কুমিরমারি গ্রামের রঞ্জন মণ্ডল বলে, ‘‘বাবা-মা জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরে কোনও রকমে সংসার সামলান। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ। সামনে আমার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। স্কুলে অনলাইন ক্লাস চলছে। স্মার্ট ফোন না থাকায় বন্ধুদের সঙ্গে তাদের ফোনে ক্লাস করতাম। সরকারি ভাবে ট্যাব দেওয়ার কথা শুনেছি। সে ক্ষেত্রে পড়াশোনার কিছুটা সুরাহা হবে।’’ তবে এলাকার ইন্টারনেট ব্যবস্থা খুব খারাপ বলে সে জানায়। এত টাকার নেট কী ভাবে ভরবে তাও বুঝতে পারছে না সে। এই অভিজ্ঞতা শুধু রঞ্জনের একার নয়। প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার এমন অনেক গরিব পরিবার আছে, যাঁদের ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনার ক্ষমতা নেই।
বাড়িতে বসে ট্যাব বা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস করতে পারলেও দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস কী ভাবে সম্ভব হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। রাঙাবেলিয়া হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণগোপাল মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক গরিব ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। তবে প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় ইন্টারনেটের বড় সমস্যা। এ ক্ষেত্রে ট্যাব কতটা কাজ করবে জানি না।’’ তাঁর আশঙ্কা, অনেক ছাত্রছাত্রী ট্যাব পাওয়ার পরে পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য কাজেও ব্যবহার করতে পারে। সে ক্ষেত্রেও বিপদের ঝুঁকিও থাকবে।
গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘এটা ঠিক, ব্লক এলাকার বেশ কিছু দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ খুবই খারাপ। ছাত্রছাত্রীদের পঞ্চায়েত, ব্লক অফিসের ইন্টারনেট ব্যবহার করার কথা বলেছি। তা ছাড়া আমরা বিভিন্ন সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগের উন্নতি করার জন্য বৈঠক করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy