সাবমার্সিবলে জল নেওয়া চলছে। নিজস্ব চিত্র
বাতি জ্বললেই হাঁক ডাক পড়ে যায় সারা পাড়া জুড়ে। বাচ্চা কোলে কলসি, বালতি নিয়ে মহিলারা একছুটে জল আনতে যান পাম্প মালিকের বাড়িতে। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের বরদানগরগিরি পাড়ায় কয়েক মাস ধরে নলকূপ খারাপ। বাসিন্দারা চাষের জন্য ব্যবহৃত সাবমার্সিবলের দূষিত জলের উপরেই নির্ভর করে রয়েছেন।
ওই ব্লকের নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে মণিনদী ও ঠাকুরাণ নদীর পাশেই ওই গ্রামটি। জনসংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। গ্রামের একমাত্র পানীয় জলের নলকূপটি ফি বছর খারাপ হয়ে যায়। কারণ, গরমে জলস্তর নেমে যায়। ফলে পানীয় জলের জন্য ভরসা করতে হয় সাবমার্সিবল পাম্পের উপরে। গ্রামীণ এলাকা হওয়ায় প্রায়ই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। লোডশেডিংয়ের সময়ে পাম্প চলে না। ফলে সাবমার্সিবলের জল নিতেও মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের বিডিও স্বাতী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে বেশ কিছু অকেজো নলকূপ সারানো এবং নতুন নলকূপ বসানো হয়েছে। ওই গ্রামের নলকূপটির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় আট বছর ধরে গরম পড়লেই পাড়ার নলকূপ খারাপ হয়ে যায়। আবার সেই কয়েক মাস পরে বর্ষা শুরু হলে নলকূপে জল ওঠে। অকেজো হয়ে পড়ে পাড়ার অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের নলকূপটি। সেখানেও কচিকাঁচাদের খাওয়ার রান্না থেকে পানীয় জলের জন্য ভরসা সাবমার্সিবল পাম্পের দূষিত জলই। ঝড়-বৃষ্টির ফলে কোনও কারণে বড় রকমের বিপর্যয় হলে দিনের পর দিন লোডশেডিং হয়ে থাকে। সে সময় আর পাম্পও চালানো যায় না। প্রায় দেড় থেকে দু’মাইল দূরে তারা মণ্ডলের ঘেরি, ডাক্তারের ঘেরি বা কঙ্কনদিঘি গ্রাম থেকে জল আনতে যেতে হয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পানীয় জলের নলকূপটি দিনের পর দিন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে পাম্পের দূষিত পানীয় জল খেতে হচ্ছে। আর দূষিত জল খেয়ে পেটের রোগ ও চর্ম রোগও হচ্ছে বলে গ্রামবাসীরা জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা অমর গিরি, সুমিতা গিরিদের অভিযোগ, ফি বছর গরম পড়লেই আমাদের গ্রামে জলের হাহাকার শুরু হয়। এতদিনেও জনস্বাস্থ্যকারিগরি দফতরের পাইপ লাইন ঢুকল না। শিশু থেকে শুরু করে বড়দের পেটের রোগ লেগেই রয়েছে। এ দিকে সব জেনেশুনেও গ্রামের মানুষ ওই দূষিত জলই খাচ্ছে।
সাবমার্সিবল পাম্পের মালিক হরিপদ সামন্ত বলেন, ‘‘গ্রীষ্মকালে বোরোচাষ ও আনাজ চাষের জলের জোগান দেওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে পাম্পের সাহায্যে জল তুলি। গ্রামের নলকূপ খারাপ হয়ে যাওয়ায় সকাল দুপুর সন্ধ্যা তিনবার জল দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছি।’’
ওই গ্রামের নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের নীলিমা বেরা বলেন, ‘‘অকেজো নলকূপটি সারানো বা নতুন নলকূপ বসানোর জন্য একাধিকবার প্রশাসনকে বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’
ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের কমলাকান্ত পুরকাইত বলেন, ‘‘সমস্ত বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসনকে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy