অস্ত্র-সহ বসিরহাট পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া অস্ত্রের কারবারি মনিরুল ইসলাম গাজিকে হেফাজতে নিলেন রাজ্য পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার বসিরহাট জেল থেকে মনিরুলকে আলিপুর আদালতে নিয়ে আসা হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিনের জন্য এসটিএফ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। গত মাসের মাঝামাঝি বসিরহাটের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা একটি এলাকা থেকে এই অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করেছিল স্থানীয় পুলিশ। মনিরুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধার করা হয় তিনটি দোনলা বন্দুক, একটি পাইপগান এবং ২১ রাউন্ড কার্তুজ। এক পুলিশ অফিসার জানান, জীবনতলা থেকে কার্তুজ এবং বন্দুক উদ্ধারের মামলায় মনিরুলকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাকি কার্তুজ ও বন্দুক উদ্ধারের চেষ্টার সঙ্গে এই চক্রে আরও কারা জড়িত, ধৃতকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা করা হবে।
প্রসঙ্গত, মার্চ মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থেকে ১৯০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধারের পাশাপাশি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিলেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। তাদের জেরা করে পরে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন কলকাতার বি বা দী বাগের একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণির দুই কর্মী, জয়ন্ত দত্ত ও শান্তনু সরকার। এ ছাড়া, কয়েক জন অস্ত্র কারবারিকেও সেই সময়ে গ্রেফতার করেছিলেন গোয়েন্দারা।
তদন্তকারীদের দাবি, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছেছিল বি বা দী বাগ এবং লালবাজারের কাছে দু’টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণি থেকে। ওই দোকান দু’টি সিল করে দেওয়ার সঙ্গে এসটিএফের গোয়েন্দারা সেগুলির মালিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। বিপণি দু’টিতে অভিযান চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেখানকার স্টক রেজিস্টার।
কেন মনিরুলকে হেফাজতে নিলেন এসটিএফের গোয়েন্দারা?
তদন্তকারীরা জানান, মনিরুলের কাছ থেকে যে বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি গিয়েছিল কলকাতার একটি অস্ত্র বিপণি থেকে। সংশ্লিষ্ট দোকানের কর্মী ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি দিয়েছিল জীবনতলার বাসিন্দা হাজি রশিদ মোল্লাকে। হাজি আবার বন্দুকটি বিক্রি করে মনিরুলকে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জীবনতলা থেকে গ্রেফতার করেছিলেন হাজিকে। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে সে।
অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশ এলাকার প্রাচীন অস্ত্র বিপণিতে কার্তুজ এবং অস্ত্র বিক্রির উপরে নজরদারি চলছে না বলে অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ, তারই সুযোগ নিয়ে দু’টি দোকান থেকে বেআইনি ভাবে কার্তুজ ও বন্দুক পাচার করা হয়। সূত্রের খবর, এর পরেই লালবাজারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগের মতো পুলিশের এক জন পদস্থ আধিকারিককে দোকানে দোকানে গিয়ে মজুত থাকা এবং বিক্রি হওয়া অস্ত্র ও কার্তুজের হিসাব মিলিয়ে দেখতে হবে। কোথাও কোনও রকম অনিয়ম সামনে এলে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থাও নিতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)