সাগর বিশ্বাসকে সপাটে চড় শিবম রায়ের। — নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় তাঁর পরিচিতি তৃণমূল সমর্থক হিসাবে। সেই শিবম রায়ের বিরুদ্ধেই উঠেছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি চলাকালীন বিজেপির এক মণ্ডল সভাপতির গালে সপাটে চড় মারার অভিযোগ। যা নিয়ে ঘনিয়েছে বিতর্ক। রাজনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। শিবমের এই কাণ্ডে ক্ষমাপ্রার্থী তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও।
শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের নীলগঞ্জের সাইবনা এলাকায় চলছিল ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি। ‘দিদির দূত’ হিসাবে এলাকায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। কর্মসূচি চলাকালীন আচমকা স্থানীয় বাসিন্দা সাগর বিশ্বাসের গালে সপাটে চড় মেরে বসেন শিবম। সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়তেই দানা বাঁধে বিতর্ক। এ নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি এ-ও জানান, সাগরের গালে শিবমের চড় মারার ঘটনা তিনি নিজের চোখে দেখেননি। তবে তাতে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসেনি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ব্যারাকপুর-বারাসত রোডে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন তাঁরা। পরে প্রকাশ্যে আসে সাগরের রাজনৈতিক পরিচয়। জানা যায়, আক্রান্ত সাগর বিজেপির নীলগঞ্জ মণ্ডলের সভাপতি।
অবরোধকারীদের নেতৃত্বে থাকা স্থানীয় বিজেপি নেতা পিকলু শর্মা অভিযোগ করেন, ‘‘এলাকার নন্দদুলাল মন্দিরের সংস্কার নেই। জলের ব্যবস্থা নেই। তা নিয়ে আজ সাধারণ মানুষ ক্ষোভের কথা প্রকাশ করে। তার মধ্যে মন্দির কমিটিতে থাকা সাগরও ছিলেন। তিনি মন্ত্রীকে বিষয়টি জানাতে গেলে তৃণমূলের দুষ্কৃতী বলে পরিচিত শিবম তাঁর উপর চড়াও হয়। তার প্রতিবাদে আমাদের অবরোধ। আমরা চাই, ওকে গ্রেফতার করা হোক। সাগর বিজেপি কর্মী। উনি নীলগঞ্জের মণ্ডল কমিটির সদস্য।’’ বিষয়টি নিয়ে শিবমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হবে বলেও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
দত্তপুকুরের নীলগঞ্জের সাইবনা এলাকার বাসিন্দা শিবম। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী তিনি। ঘটনার সময় প্রকাশ্যে এসেছিল তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়। এ নিয়ে রথীন বলেন, ‘‘আমাদের দলের সক্রিয় কেউ নয়। দলে অনেক সমর্থক থাকেন। থাকতে পারেন।’’ স্থানীয় একটি ক্লাবের গাছকাটা নিয়ে ‘অভ্যন্তরীণ সমস্যা’র জেরে এই ঘটনা বলে মত খাদ্যমন্ত্রীর।
ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ পাওয়া যায়নি শিবমের। ছেলের ‘কীর্তি’ শুনে ক্ষমা চেয়েছেন তাঁর মা অণিমা রায়। শিবমের স্ত্রী ইন্দ্রাণী বৈষ্ণব রায়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ঘটনার পর বিজেপির লোকজন এসে বাড়ি ঘেরাও করেছিল। ওরা এসে মারধরের হুমকি দিয়েছে।’’
চড়কাণ্ডে বিজেপির ‘ইন্ধন’ দেখছে তৃণমূল। ঘটনার বেশ কিছু ক্ষণ পর রথীনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সকাল থেকে শুনছিলাম, আমার কাছ অভিযোগ জানাতে এসে মার খেতে হয়েছে ওই যুবককে। তবে, অভিযোগ-অনুযোগ নয়, ‘দিদির সুরক্ষা কর্মসূচি’ বানচাল করার চেষ্টা ছিল। পরে জেনেছি, উনি বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। কারণ, ওই ঘটনায় বিজেপি যে ভাবে প্রতিক্রিয়া দিল তাতে বোঝা গেল, ওটা পরিকল্পনা ছিল, এই কর্মসূচি বানচাল করার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy