—প্রতীকী চিত্র।
স্কুলের মধ্যে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর থেকে স্কুলে পড়ুয়ারা আসা বন্ধ করে দিয়েছিল। আতঙ্কে-ভয়ে অভিবাবকেরাও হাড়োয়ার বাছড়া এমসিএইচ হাইস্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠাতে সাহস পাচ্ছিলেন না।
দিনের পর দিন শিক্ষকরা ক্লাস নিতে পারেননি পড়ুয়াদের। স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ্রচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পর স্কুলের ১৭৪০ পড়ুয়ার মধ্যে বড় জোর চল্লিশ শতাংশ আসছে। বাকিরা ভয়ে স্কুলে আসছে না।’’
তবে শুধু ওই ঘটনা নয় অভিভাবকেরা জানান, স্কুলের সামনেই মদের দোকান খোলা হয়েছে। এর ফলে এলাকায় বেড়েছে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা। এ বিষয়টি নিয়েও তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। ফলে ছেলেমেয়েদের একপ্রকার স্কুল বন্ধই হয়ে গিয়েছে। ওই দোকান থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মদ বিক্রিও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই মদের দোকান বন্ধের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। প্রধান শিক্ষক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘স্কুলের কাছে মদের দোকান বন্ধের জন্য শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছিল। তাঁরা তদন্ত করে গিয়েছে।’’
রবিবার পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে পুলিশ একটি শিবিরের আয়োজন করে। ওই শিবিরে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে শিশুদের পোশাক, খাতা, বই, রঙ, তুলি, পেনসিল দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু সেখানে কচিকাঁচাদের দেখা মিললেও উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের দেখা যায়নি।
বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই বলেন, ‘‘একটা অপ্রীতিকর ঘটনার পর এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় করতে এই শিবিরের আযোজন করা হয়। স্কুলের কাছে মদের দোকানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব।’’ পুলিশকর্তার আশ্বাস, ভয় পাবেন না। পুলিশ আপনাদের সঙ্গে আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭ জানুয়ারি হাড়োয়ার হরিণহুলো গ্রামের ওই স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। তা জানাজানি হলে এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। অভিযুক্তকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ হয়।
এরপর থেকেই এলাকায় থমথমে ভাব। স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কম। কিন্তু পরীক্ষার সময় পড়ুয়ারা স্কুলে না এলে তাদেরই ক্ষতি হবে। তাই আতঙ্ক কাটাতে এলাকায় পুলিশ স্কুলে আসার জন্য মাইকে প্রচারও শুরু করে।
অভিভাবকেরা জানান, এলাকায় মদের দোকানও একটি বড় আতঙ্কের কারণ। মহিলারাই এখন এলাকা দিয়ে হাঁটাচলা করতে ভয় পাচ্ছেন। ছোট ছোট মেয়েগুলিকে কী করে স্কুলে পাঠাবেন তাঁরা। মাঝে মধ্যেই দেখা যায় বহিরাগতদের। মদ খেয়ে তাঁরা মাতলামিও করেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় সীমা হালদার, নিরঞ্জন পাত্র, সারথি দাস বলেন, ‘‘মদের দোকান খোলার পর ছোট-বড় অনেকেই সারাদিন মদ খেয়ে বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী, সন্তানদের মারধর করছে। রাস্তার খুঁটিতে আলো নেই। বাড়ি বাড়ি মদ বিক্রি হচ্ছে। সন্ধ্যার পর মাতালদের দৌরাত্ম্যে মহিলারা বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।’’ এ সব জানিয়ে পুলিশকর্তার কাছে লিখিত দিয়েছেন এলাকাবাসী। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিলে তাঁরাই মদের দোকান ভাঙচুর করবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy