কয়েক সপ্তাহ আগে লাগানো চারাগাছের পাশে জমে রয়েছে খড়। নিজস্ব চিত্র
সরকারি টাকা খরচ করে বৃক্ষরোপণের নামে বসানো হয়েছিল বহু চারাগাছ। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে তার বেশিরভাগই মরে গিয়েছে। বৃক্ষরোপণের পরে গাছগুলির পরিচর্যায় প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বিশপুর পঞ্চায়েতের অনেকগুলি বুথে কয়েক মাস আগে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়। রাস্তার পাশের গাছে চারা বসিয়ে তা জাল ও কঞ্চি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে দু-একটি গাছ বেঁচে আছে, তার চারপাশে আগাছার জঙ্গল জন্মেছে। সম্প্রতি ৮৫ নম্বর বুথের হাটখোলা পাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, জাল দিয়ে ঘিরে রাখা অংশ আগাছায় ভর্তি। কয়েকটির মধ্যে আবার চারাগাছটাই নেই। এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা তিন মাস আগে ৮০০ চারা লাগিয়েছিলেন। কিন্তু গাছগুলোর দেখভাল করে না কেউ। ফলে কয়েক মাসের মধ্যেই এই দশা হয়েছে। গাছগুলোর পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভরগোষ্ঠীর সদস্য সুমিত্রা সর্দার বলেন, “আমরা এখন মাঠের কাজ করছি। তাই পরিচর্যার কাজ করতে পারছি না। মাঠের কাজ শেষ হলেই সবাই মিলে পরিচর্যা করা হবে। এক বছর দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের।”
কয়েক বছর আগে স্থানীয় আর একটি রাস্তার পাশে তাঁরা প্রায় ৪০০ চারা লাগিয়েছিলেন বলে জানান সুমিত্রা। সেই রাস্তায় গিয়ে দেখা গেল প্রায় কোনও গাছেরই অস্তিত্ব নেই। দু-একটা গাছ জাল ও কঞ্চি ঘেরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা নকুল দাস বলেন, “পরিচর্যার অভাবে ৯৯ শতাংশ গাছ মরে গিয়েছে। কোনও নজরদারি নেই। কেন এ ভাবে সরকারি টাকা নষ্ট করা হয় বুঝি না।”
একই অবস্থা বায়লানি চর পাড়ায়। কয়েক মাস আগে লাগানো গাছের মধ্যে অনেক গাছই মরে গিয়েছে। কোথাও আবার চারা গাছের উপর খড় বা পাটকাঠির বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কল্পনা সর্দার বলেন, “প্রায় ৩০০ গাছ লাগানো হয়েছিল। স্থানীয়দের সচেতনার অভাবে গাছ নষ্ট হচ্ছে। ছাগল গরুতে খেয়ে নিচ্ছে।” এই ছবি আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, মূলত একশো দিনের কাজ প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মাধ্যমে এই গাছ লাগানো হয়। গাছ দেখভালের দায়িত্ব থাকে তাঁদেরই। এর জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে ২০৪ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ১০০টি গাছ লাগাতে সরকারের খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা।
স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীর মান্না বলেন, “শুধু সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। সরকার এ বার একদম ছোট ছোট গাছ না লাগিয়ে একটু বড় গাছ লাগাতে পারে। অথবা বৃক্ষরোপণের দায়িত্ব কোনও এনজিও কে দিয়ে দেখতে পারে।” হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ি বলেন, “বিষয়টা নিয়ে কী করা যায় দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy