রেজাল্ট দেখে যেতে পারল না মেয়ে। আবারও কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা। শুক্রবার সামসুল হুদার তোলা ছবি।
ছোট থেকে পড়াশোনায় ভাল ছিল সে। ক্লাসে প্রথম হত। তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখত পাড়া প্রতিবেশীরা। অভাব অনটনের মধ্যে দিয়েও নিজের পড়াশোনা ভাল ভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষকেরাও তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। পরিবারকেও আশার আলো দেখাতে শুরু করেছিল সে। কিন্তু বাইকের এক ধাক্কায় সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল নস্কর পরিবারের।
মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ আগে মায়ের সঙ্গে জল আনতে গিয়ে মোটর বাইকের ধাক্কায় প্রাণ হারায় জীবনতলার মুক্তারপুরের বাসিন্দা সুপর্ণা নস্কর (১৬)। ঈশ্বরীপুর মর্জিনা বিদ্যানিকেতন থেকে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সে। শুক্রবার ফল প্রকাশ হওয়ার পর জানা গেল ১৫০ জন ছাত্রীর মধ্যে সুপর্ণা এ বার ৫০৭ নম্বর পেয়ে স্কুলে প্রথম হয়েছে। কিন্তু এই ফল জানতে পারল না সুপর্ণা।
জীবনতলার প্রত্যন্ত গ্রাম হল মোক্তারপুর। এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে ফল ঘোষণা হওয়ার পরই সুপর্ণার কাকা তথা ওই স্কুলের শিক্ষক এসএমএসের মাধ্যমে খবরটা প্রথম জানতে পারেন। চোখ ভর্তি জল, বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে বাড়ির সকলকে তিনিই সুপর্ণার প্রথম হওয়ার খবরটা দেন। এত বড় একটা আনন্দের খবর পাওয়ার পর নস্কর বাড়ির প্রত্যেকেরই চোখে জল নেমে আসে। আজ সুপর্ণা বেঁচে থাকলে হয় তো ছবিটা অন্যরকম হত বলে কাকা সুশান্ত নস্কর জানান। মা কবিতা নস্কর বলেন, ‘‘আমার মেয়ে সাংবাদিক হতে চেয়েছিল। এই ফল আর কী হবে। সব শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ সুপর্ণার মৃত্যু ঘটনায় এক পড়শি কিশোরকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
এ দিন স্কুলে মার্কশিট নিতে ভিড় করেছে পড়ুয়ারা। কিন্তু কারও কোনও হুটোপাটি নেই। নেই আনন্দের ছাপ। কারণ তাদের প্রথম হওয়া বন্ধু আজ আর তাদের মধ্যে নেই। শনিবার স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালন সমিতির তরফ থেকে সুপর্ণার বাড়িতে গিয়ে মার্কশিট, শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবরাম দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy