পাড়ি: জলের খোঁজে। নিজস্ব চিত্র
ট্যাঙ্ক আছে, জল নেই! থাকলেও জল পড়ে সুতোর মতো সরু।
এমনই পরিস্থিতি মগরাহাটের বিস্তীর্ণ এলাকায়। মগরাহাট ২ ব্লকের বেশ কিছু পঞ্চায়েতের ট্যাঙ্ক থেকে জল ঠিক মতো সরবরাহ হয় না বলে অভিযোগ।
কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিধায়ক নমিতা সাহা। মুখ্যমন্ত্রী সে দিন বিধায়কের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, পানীয় জল মাঠে চাষের কাজে ব্যবহার না করে সঠিক কাজে ব্যবহার করলে এই সঙ্কট
থাকবে না।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নোদাখালির ডোঙাড়িয়া জল প্রকল্প থেকে পাইপ লাইনের সাহায্যে ওই ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে দীর্ঘ দিন ধরে জল সরবরাহ হয়। সারা ব্লকের মধ্যে মুলটি, হোটরমর্যাদা ও ধামুয়া দক্ষিণ— এই তিন পঞ্চায়েতে জল আসে ডোঙাড়িয়া থেকে বারুইপুর হয়ে জয়নগরের সরবেড়িয়া ৪৩ নম্বর ট্যাঙ্কে। ওই ট্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে মগরাহাটের মুলটি হাইস্কুলের পাশে রয়েছে গনকহাটি ৪২ নম্বর ট্যাঙ্ক। ৪৩ নম্বর ট্যাঙ্ক থেকে জল ৪২ নম্বরে আসে। কিন্তু ওই তিন কিলোমিটার রাস্তায় পাইপলাইন কোথাও কাটা, কোথাও কার্যত কোনও লাইনই নেই বলে অভিযোগ। কয়েক বছর ধরেই ৪৩ নম্বর ট্যাঙ্ক থেকে যে পরিমাণ জল আসছে, তা দিয়ে ৪২ নম্বর ট্যাঙ্ক ভরছে না। ফলে মুলটি পঞ্চায়েতে উত্তর মুলটি, বনসুন্দরিয়া, জলধাপা, হোটরমর্যাদা পঞ্চায়েতে বানিবেনিয়া, উত্তর মুকুন্দপুর এবং ধামুয়া দক্ষিণ পঞ্চায়েতে ধামুয়া গ্রামের মানুষ দিনের পর দিন পর্যাপ্ত জল পাচ্ছেন না।
আরও অভিযোগ, জল আসেও সামান্য সময়ের জন্য। কল থেকে জল পড়ে সরু সুতোর মতো। সেই জলটুকু ধরার আশাতেই দিন-রাত কল-চত্বরে সজাগ হয়ে থাকেন মানুষ। জল পড়তে শুরু করলেই বালতি পেতে ধরেন। জলের লাইন নিয়ে কলপাড়ে কোন্দল, চিৎকারও কম হয় না!
গ্রীষ্মে জলস্তর নেমে যাওয়ায় এলাকার অধিকাংশ নলকূপই অকেজো। কোনও কোনও নলকূপ থেকে জল যদিও বেরোচ্ছে, তা ঘোলা ও বালিমিশ্রিত বলে অভিযোগ। পাড়ার পুকুরের জলও তলানিতে। তা ছাড়া, ইদানীং মাছ চাষের কারণে পুকুরের জলে কীটনাশক ছড়ানো হয়। দূষিত হয়ে যাওয়ায় জল থাকলেও তা সব কাজে ব্যবহার করা যায় না। স্নান করলে গায়ে র্যাশ বেরোয় বলে জানালেন অনেকে। সব মিলিয়ে এলাকাবাসী জল নিয়ে নাজেহাল।
উত্তর মুলটি গ্রামের প্রতিমা দাস, গীতা দে, বীণা সরকারদের অভিযোগ, পাড়ার নলকূপ থেকে হলুদ জল বেরোচ্ছে। পানীয় জল আনতে যেতে হচ্ছে পাশের পাড়ায়। এই গরমে এবং কড়া রোদে বাড়ির ছোটদের জল আনতে যেতে হচ্ছে। বড়রা তো অন্য কাজে ব্যস্ত থাকছেন।
মগরাহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘বহু বছর আগে পাইপলাইন ও ট্যাঙ্কগুলি তৈরি হয়েছে। সেগুলির সংস্কার না হওয়ায় মগরাহাট এলাকা জুড়ে জলসঙ্কট চলছে। জল সরবরাহের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকের যা সিদ্ধান্ত হবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা জানানো হবে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেই মতো পদক্ষেপ করবে।’’
মগরাহাট ২ বিডিও রথীন বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনও এ নিয়ে অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy