Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

যাতায়াতের বিড়ম্বনা, যানজটে তিতিবিরক্ত হাবড়া-বসিরহাটের মানুষ, নষ্ট হচ্ছে বহু সময়

যানজট  থেকে মুক্তি পেতে যশোর রোডে উড়ালপুল তৈরির দাবি দীর্ঘ দিনের। ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলি প্রচারে এ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। 

হাঁসফাঁস: হাবড়ার পথঘাট। ছবি: সুজিত দুয়ারি

হাঁসফাঁস: হাবড়ার পথঘাট। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
হাবড়া শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৩
Share: Save:

পথে বেরিয়ে যানজটে ফেঁসে যাওয়া প্রতিদিনের জীবনে এক রকম রুটিন বলেই মেনে নিয়েছেন হাবড়ার মানুষ।

২০১১ সালের হিসেবে, হাবড়া শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৪৭ হাজার। এখন সংখ্যাটা প্রায় ২ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ধরেই নেওয়া যায়। উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্যের জায়গা হিসেবে হাবড়ার গুরুত্ব রয়েছে। রোজ প্রায় তিন লক্ষ মানুষের চাপ থাকে শহরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দোকানপাট-যানবাহন। অবধারিত ভাবে বেড়েছে যানজটও। কিন্তু সমাধানের পথ এখনও দেখাতে পারেনি কেউ। বহু প্রকল্প হাতে নিলেও বাস্তবায়ন করা যায়নি।

যানজট থেকে মুক্তি পেতে যশোর রোডে উড়ালপুল তৈরির দাবি দীর্ঘ দিনের। ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলি প্রচারে এ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।

শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক যানজটের জন্য কুখ্যাত। বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদারের দাবি, কেন্দ্র সরকার হাবড়া শহরে উড়ালপুল তৈরির জন্য পদক্ষেপ করেছে। তবে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করছে না। হকার উচ্ছেদের ব্যবস্থাও করছে না। ফলে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়নি। বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য হাবড়া শহরে উড়ালপুল তৈরি না হওয়ার দায় কেন্দ্রের ঘাড়েই চাপিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলেই উড়ালপুলের কাজ থমকে রয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া শহরের দু’টি উড়ালপুল তৈরি হওয়ার কথা। মাপজোক, মাটি পরীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে। এখন গাছ কাটার প্রয়োজন। কিন্তু আদালতের নির্দেশে তা বন্ধ থাকায় পুরো কাজই থমকে রয়েছে।

অতীতে যানজটমুক্ত শহরের দাবিতে শহরবাসী বিক্ষোভ-আন্দোলন পথ অবরোধ, সড়কে ধানের চারা পুঁতে দিলেও এখন আর তেমন প্রতিবাদ দেখা যায় না। গোটা বিষয়টা যেন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। ২ নম্বর রেলগেট থেকে চোংদা মোড় পর্যন্ত যশোর রোডের দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার। ওই পথ পেরোতেই দিনের ব্যস্ত সময়ে এক ঘণ্টা বা তার বেশি সময় লেগে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরে যানজটের অন্যতম কারণ অপরিসর রাস্তা।

বনগাঁ মহকুমার মানুষকে সড়ক পথে কলকাতা যেতে হলে হাবড়া হয়েই যেতে হয়। পেট্রাপোল বন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক ওই শহরের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। রোগী নিয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্স করে যেতে হলে যানজটে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। রোগীদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে। অতীতে দেখা গিয়েছে, হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতিকে নিয়ে আসার পথে যানজটে পড়ে অটোর মধ্যেই প্রসব হয়ে গিয়েছে। অনেকক্ষণ যানজটে দাঁড়িয়ে থাকার পরে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালায় যান চালকেরা। তার জেরে দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত্যুও হয়।

রাজ্য তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে পুলিশ-প্রশাশন থেকে ব্যবসায়ী সংগঠন সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সড়কের দু’ধার থেকে কমবেশি হকারমুক্ত করা হয়েছে। হকারদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য ১ নম্বর রেলগেটের কাছে তৈরি হয়েছে হকার্রস মার্কেট।

শহরকে যানজটমুক্ত করতে অশোকনগরের শেরপুর কালীবাড়ি মোড় থেকে হাবড়ার বেলঘড়িয়া মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বাইপাস রাস্তা তৈরি হলেও ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন তেমন চলে না। প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘বাইপাস রাস্তাটি নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে শীঘ্রই ওই রাস্তা দিয়ে ট্রাক ও বড় গাড়ি চলানোর কাজ শুরু হবে। তা হলে শহরের যানজট অনেকটা কমবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Civic Issues Traffic Jam Habra Basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy