ট্যাঙ্কে করে আনা জল সংগ্রহ করছেন গ্রামবাসীরা। তাড়দহের কাপাসহাটিতে। ছবি: সামসুল হুদা
গরম পড়তেই ভাঙড় ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় শুরু হয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপে জল উঠছে না। বহু নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত বড় ট্যাঙ্কে করে এলাকায় পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যদিও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, প্রাপ্ত জলের পরিমাণ পর্যাপ্ত নয়। তা ছাড়া, পান করা ছাড়াও অন্যান্য দৈনন্দিন কাজের জন্য জল পেতেও সমস্যা হচ্ছে। ফি বছর একই সমস্যা। অথচ, প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে পাকাপাকি কোনও পদক্ষেপ করা হয় না বলে অভিযোগ।
ভাঙড় মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা। দু’ফসলি, তিন ফসলি জমিতে প্রায় সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের আনাজ চাষ হয়। গরমে চাষের জন্য এলাকার চাষিরা সাবমার্সিবল মেশিন, স্যালো মেশিন বসিয়ে ভূগর্ভস্থ জল তুলে সেচের কাজে ব্যবহার করেন। এতে ভাঙড়-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলের স্তর অনেকটা নেমে গিয়েছে। বর্তমানে এলাকার অধিকাংশ নলকূপ থেকে জল উঠছে না। গৃহস্থালির কাজকর্ম, স্নান, শৌচকর্ম করার জন্য অনেকেই পুকুরের জলের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। তবে ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় বহু পুকুর, খাল, জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় বর্তমানে বড় পুকুরের সংখ্যাও কমে এসেছে। এলাকার অনেক পুকুরের জল তেমন পরিচ্ছন্ন নয়। অনেক পুকুরে আবর্জনা ফেলা হয়, অনেকে গৃহপালিত পশুদের পুকুরে স্নান করান।
ব্লক প্রশাসনের সূত্রের খবর, ভাঙড় ১ ব্লকের তাড়দহের কাপাসহাটি, খড়ম্বা, মাধবপুর, তালদিঘি-সহ প্রায় ২৫টি গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা তীব্র। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই জল কিনে পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁরা বেশ কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফা মোল্লা বলেন, ‘‘প্রতি বছর গরমের সময় জলকষ্টে ভুগি। এলাকার নলকূপ সব অকেজো হয়ে গিয়েছে। যথেচ্ছ ভাবে সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ জল তোলা বন্ধ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।’’ আর এক স্থানীয় গোবিন্দ গায়েনের কথায়, ‘‘সরকার থেকে বাড়ি বাড়ি পাইপ লাইনে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কথা হলা হচ্ছে। অথচ, আমরা নলকূপ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারছি না। গরমের মধ্যে পায়ে হেঁটে দূরে গিয়ে জল নিয়ে আসতে হচ্ছে। দ্রুত বাড়ি বাড়ি জলের ব্যবস্থা করা দরকার।’’
এ বিষয়ে তাড়দহের কাপাসহাটি বুথের তৃণমূলের সভাপতি নাসির শেখ বলেন, ‘‘এই এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সমস্যা দেখা দিয়েছে। এলাকার মানুষের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দিতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদারবলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়ায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। আপাতত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে কথা বলে বড় ট্যাঙ্কে করে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলপৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জলসঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy