—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শহরের মধ্যেই শত্রুর ডেরা!
কোথাও ফাঁকা পরিত্যক্ত জমি, কোথাও বদ্ধ নালা, কোথাও আবার প্রোমোটিংয়ের নির্মাণস্থল। বিধাননগর পুর এলাকায় এমন বহু জায়গা মশার বংশবিস্তারের আদর্শ স্থান হয়ে রয়েছে। যে সব জায়গায় সাফাইয়ের সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছনো সম্ভব নয়। এমনই রিপোর্ট পেয়ে উদ্বেগে প্রশাসন। কলকাতার পাশেই পরিকল্পিত উপনগরী সল্টলেক ও রাজারহাট নিয়ে তৈরি একটি কর্পোরেশন এলাকা সম্পর্কে এমন চিত্র পেয়ে নড়ে বসেছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। কারণ, সল্টলেকে বহু বিশিষ্ট মানুষের বাস। রাজ্যের মন্ত্রী-আমলাদেরও অনেকে সেখানে থাকেন।
ওই রিপোর্ট বলছে, বিধাননগর পুর এলাকার ১৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গিপ্রবণ। যার মধ্যে আছে সল্টলেকের ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৯ এবং ৪১— এই পাঁচটি ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডগুলির মধ্যে ৩১ নম্বরটি বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত এবং ৩৯ নম্বরটি মেয়র পারিষদ রাজেশ চিরিমারের। গত এক সপ্তাহে ওই দুই ওয়ার্ডে দু’জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। সামগ্রিক ভাবে, বিধাননগরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দু’হাজার ছুঁইছুঁই।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর ২৯ নম্বর এবং সব্যসাচীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে কয়েকটি সরকারি অফিস চত্বরে জমে থাকা ছাঁট, অফিসের উপরের খোলা জলের ট্যাঙ্ক ও জমে থাকা আবর্জনা। এ ছাড়াও ১৩, ২৬ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে বহু ফাঁকা জমি, বিভিন্ন আবাসনে জমে থাকা জঞ্জাল ডেঙ্গির মশা জন্মানোর সহায়ক হয়ে রয়েছে।
সম্প্রতি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যুর পরে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি সব্যসাচী তোপ দেগেছিলেন পুরসভার বিরুদ্ধেই। প্রশ্ন তুলেছিলেন, আইন থাকা সত্ত্বেও পুর কর্তৃপক্ষ কেন অসচেতন নাগরিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছেন না? বৃহস্পতিবার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে এক বাসিন্দার মৃত্যুর পরে পুরপ্রতিনিধি রাজেশ বলেন, ‘‘বহু জায়গায় প্রোমোটিং হচ্ছে। নির্মাণস্থল রয়েছে। সেখানে ডেঙ্গির সচেতনতা-বিধি মানা হচ্ছে না। বুধবার জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে আমি প্রস্তাব দিয়েছি, যাতে সংশ্লিষ্ট নির্মাণস্থলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জরিমানা করা হয়। এ ভাবে চলতে দেওয়া যায় না। পরিষেবা দেব, আর কিছু লোকের জন্য সেটা ভেস্তে যাবে, তা হতে পারে না।’’
গত বছর বিধাননগরে ডেঙ্গিতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ বার ইতিমধ্যেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সংক্রমণের হার কমছে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘৩৮তম সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৭৪। ৩৯তম সপ্তাহে, গত বুধবার পর্যন্ত সেই সংখ্যা ৩৬৯।’’
গত বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বেশ কয়েকটি পুরসভার সঙ্গে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে সরকারি ভবনগুলি পরিচ্ছন্ন থাকছে কি না, সে দিকে নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
বিধাননগর পুরসভা জানাচ্ছে, এক-দু’দিনের মধ্যে পুজো কমিটিগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হবে, যাতে মণ্ডপ থেকে ডেঙ্গি-সচেতনতার প্রচার চালানো হয়। মণ্ডপ তৈরির সময়ে এবং খোলার সময়ে
বাঁশ কী ভাবে রাখতে হবে, সেই নির্দেশও দেওয়া হবে। কারণ, বাঁশের উপরের খোলা গর্তে জল জমে মশা জন্মায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy