গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুরের পরিত্যক্ত সেনা ছাউনি ঘিরে ‘ভুতুড়ে’ গুঞ্জন! ইদানীং লোকমুখে প্রচলিত, সন্ধে নামলেই না কি সেখানে শুরু হয় ‘তেনাদের’ আনাগোনা। আর এতেই অন্যরকম গন্ধ পাচ্ছিলেন পুলিশ কর্তারা। ভূতের ভয় দেখিয়ে সেখানে অন্য কোনও অপকর্ম হচ্ছে না তো! ‘ভূত’ ধরতে তাই হানা দেয় পুলিশ। হাতেনাতে ধরা পড়ে কয়েক জন দুষ্কৃতী।
স্বাধীনতার পরে দেগঙ্গা থানা থেকে এক কিলোমিটার দূরে বিশ্বনাথপুরে তৈরি হয় একটি ছাউনি। সেখানে সেনা জওয়ানরা থাকতেন। সেনার হইচই আর নিত্য আনাগোনায় গমগম করত এলাকা। সেই সময় থেকেই বসিরহাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে টাকি রোডের ধারের এই বাড়ি সেনা ছাউনি হিসেবে পরিচিতি পায়।
প্রায় ৭০ বছরের পুরনো বাড়ি বর্তমানে সংস্কারের অভাবে ভগ্নপ্রায়। সেই সুযোগে একে অপরাধের আখড়ায় পরিণত করেছে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয়রা বলছেন, দিনের বেলা সেখানে গরু চড়ে। আর রাত নামতেই দখল চলে যায় দুষ্কৃতীদের হাতে। ইদানীং সেই বাড়িতে ভূত আছে বলেও প্রচার চলছে এলাকায়। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, ভূত আছে এ কথা রটিয়ে দিলে সাধারণের চোখের আড়ালে থাকতে সুবিধা। নির্বিঘ্নে সারা যায় অপকর্ম। এত পুরনো ভগ্নপ্রায় বাড়িটিকে ‘কাজের’ জায়গায় পরিণত করতে, তাই পুরনো ও সহজ এই পন্থাই নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। দেগঙ্গা থানার পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জনকে আটকও করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, যখন বিএসএফ জওয়ানরা থাকতেন তখন পরিপাটি অবস্থা ছিল বিশ্বনাথপুরের সেনা ছাউনির। তারা চলে যাওয়ার পরে বাংলাদেশ থেকে শতাধিক উদ্বাস্তু বসবাস করতেন। বর্তমানে তাঁরা কেউই থাকেন না। অভিযোগ, তার পর থেকেই বাড়িটি অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
দিনের বেলায় ওই বাড়িতে ঢুকলে দেখা যায়, নীচের তলাটি গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। কোনও ঘরে রাখা রয়েছে খড়, কোনও ঘরে গরুর গোবর, আবার কোনও ঘরে কাঠের টুকরো ডাঁই করে রাখা। বাড়ির বারান্দা জুড়ে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে বড় বড় জার্সি গরু। স্থানীয় মানুষজন দিনের বেলা এই বাড়িটিকে গোয়াল ঘর হিসাবে ব্যবহার করছেন।
এলাকার দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব অনিমা চৌধুরী, মনোজিৎ পাল, নির্মল সাধুখাঁ’রা চান, ক্যাম্প সংস্কারের দায়িত্ব নিক সরকার। নতুন কিছু গড়ে উঠুক। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে মুক্ত হোক সেনাদের স্মৃতিবিজড়িত সত্তর পেরনো সেনা ছাউনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy