প্রতিবাদ: বসিরহাটে। ছবি: নির্মল বসু
মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল বাধল বসিরহাটের পানিতর গ্রামে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামবাসীরা দুই মাদক বিক্রেতাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ মোস্তাকিম শেখ এবং আলিম শেখ নামে ওই দুই মাদক বিক্রেতাকে আটক করে। বুধবার এলাকায় মাদক বিক্রি বন্ধের দাবিতে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মানুষ। মাদক বিক্রেতাদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলে শান্ত হন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় মানুষের দাবি, মাদক বিক্রি বন্ধের বিষয়ে প্রশাসন তৎপর নয়। তাই গ্রামে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে মাদক। এলাকায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ছে। সন্ধ্যার পর মহিলারা রাস্তায় বেরোতে ভয় পান। গ্রামে শান্তি নষ্ট হচ্ছে। সব জেনেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে ওই গ্রামের পূর্বনিকারী পাড়ার বাসিন্দা মোস্তাকিমের বাড়িতে মাদক ট্যাবলেট ইয়াবা, মদ, হেরোইন বিক্রি হয় বলে অভিযোগ। ওই মাদকের ঠেকে আসা দুষ্কৃতীদের হাতে নানা ভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে এলাকার মানুষকে। প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান। কিছু দিন আগে এলাকার মানুষ রুখে দাঁড়ালে কয়েক মাস মাদক বিক্রি বন্ধ ছিল। অভিযোগ, কয়েক মাস যেতে না যেতে ফের একই বাড়ি থেকে মাদক বিক্রি শুরু হয়। তবে এ বারে আর পুরুষেরা নয়, মহিলারা মাদক বিক্রি শুরু করে বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ মুস্তাকিমের বাড়িতে মাদক নিতে তিন মহিলা আসেন। গ্রামের মহিলারা তাঁদের ধরে ফেলেন। দু’পক্ষের বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। এরপরেই মুস্তাকিম দলবল নিয়ে গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হয়। গন্ডগোল বাধে। এর ফলে গ্রামের আব্বাসুদ্দিন গাজি, আসিক বিল্লাহ, আরিফুল শেখ, কুতুব মণ্ডল আহত হন। এরপরেই উত্তেজিত জনতা মোস্তাকিন শেখের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গেলে জনতা মোস্তাকিম এবং তার সঙ্গী আলিম শেখকে গণধোলাই দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়।
এ দিন নেশামুক্ত সমাজ গড়তে হবে, নেশা জাতীয় জিনিস বিক্রি করা বন্ধ করতে হবে—এমন সব লেখা পোস্টার হাতে বসিরহাট থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মানুষ। হান্নান মণ্ডল বলেন, ‘‘মোস্তাকিমের বাড়িটা যেন মাদক দ্রব্যের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। প্রতিবাদ করলে দুষ্কৃতী পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয়।’’ রুকশনা খাতুন বলেন, ‘‘মাদকের নেশা করে গ্রামের অনেক মানুষ বাড়ি গিয়ে স্ত্রী, সন্তান পেটান। গৃহশান্তি নষ্ট হয়। অশান্তির জন্য ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে না।’’ একই বক্তব্য আনোয়ারা বিবিরও।
তবে মোস্তাকিন শেখের পরিবারের দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করে গ্রামের কয়েকজন তাঁদের বাড়ি ভাঙচুর এবং মহিলাদের মারধর করল। তিনজনকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy