Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কাটমানি নেওয়ার নালিশ 

প্রতিবাদে সেচ দফতরের অফিসের দেওয়ালে পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে। 

পোস্টার: ইঞ্জিনিয়ারের ঘরের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

পোস্টার: ইঞ্জিনিয়ারের ঘরের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

দিলীপ নস্কর
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০১:০৬
Share: Save:

কাটমানি নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে সেচ দফতরের অফিসের দেওয়ালে পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে।

ঘটনাটি কাকদ্বীপ মহকুমা সেচ দফতরের। দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপের নদীনালাবেষ্টিত এলাকায় সেচ বিভাগের নদী বাঁধ তৈরি, স্লুইস গেট নির্মাণ বা বাঁধ সংস্কারের কাজের জন্য প্রায় ২৭০ জন ঠিকাদার রয়েছেন। ‘কাকদ্বীপ সেচ দফতর কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের’ অধীনে ওই ঠিকাদারেরা। এঁদের মধ্যে কোনও কোনও ঠিকাদার কোটি কোটি টাকার কাজ পান। আবার কিছু ঠিকাদার অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হওয়ায় তাঁরা কোনও কাজ পেলে কয়েকজন মিলে সেই কাজ করেন। সাধারণত দেখা যায়, ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে কোনও কাজ থাকলে তার দায়িত্ব পায় ‘ডিভিশন’। তার বেশি টারার কাজ হলে ‘সার্কেল’-এর অধীনে তা চলে যায়। ডিভিশনের কাজ ছোট ঠিকাদারেরাই করেন।

ক’দিন আগে কাকদ্বীপ ডিভিশন থেকে পাথরপ্রতিমায় গোবর্ধনপুর কোস্টালের একটি নদী বাঁধের সংস্কারের জন্য আগে ৩৪ লক্ষ টাকার টেন্ডার চাওয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় কাজের পরিমাণ এবং বরাদ্দ বাড়ে। পুরনো টেন্ডার নাকচ হয়ে ডিভিশন থেকে তা সার্কেলে চলে যায়। টেন্ডার দাঁড়ায় ৬৪ লক্ষ টাকার। ওই টাকার টেন্ডার নেওয়ার মতো অর্থনৈতিক ক্ষমতা ডিভিশনের ছোট ঠিকাদারদের নেই। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।

ওই ঠিকাদারদের প্রশ্ন, ডিভিশনের টেন্ডার সার্কেলে গেল কেন? বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ এলাকায় পরিচিত বড় ঠিকাদার শক্তিপদ কয়াল সেচ দফতরের আধিকারিক সঙ্গে টেন্ডারের বিষয়ে কথা বলতে যান। অফিসে ঢোকার পাশেই ইউনিয়ন অফিস। সে সময়ে ইউনিয়ন অফিসে থাকা কয়েকজন ঠিকাদার শক্তিকে ভিতরে ডাকে। ইউনিয়ন অফিসের মধ্যেই দু’পক্ষের বচসা, হাতাহাতি বেধে যায়। জখম হন শক্তি। তাঁকে কাকদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে পাঠানো হয় কলকাতায়। দু’পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেছে থানায়।

ওই ঘটনার পরে ছোট ঠিকাদারেরা দাবি তোলেন, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কাটমানি খেয়ে বড় ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, টেন্ডার পাওয়ার পরে কোন দোকান থেকে সরঞ্জাম নিতে হবে, তা-ও ঠিক করে দেন দফতরের ওই আধিকারিক।

‘কাকদ্বীপ সেচ দফতর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোশিয়েসনের সম্পাদক দেবাশিস রায়ের অভিযোগ, ‘‘যে সমস্ত কাজ আমাদের দেওয়া হয়, তা বর্ষার সময়ে। ফলে কাজ শেষ করতে পারি না। আমরা কাজ করার ২-৩ বছর পরে টাকা হাতে পাই। এমনকী, ওই ইঞ্জিনিয়ারের নির্দেশে কয়েক মাস ধরে প্রায় ১ কোটি টাকার নদী বাঁধ সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।’’

কাকদ্বীপ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কল্যাণ দে বলেন, ‘‘ওঁদের অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। প্রয়োজনে ওঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kakdwip Bribe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy