মন্দা: কমছে ক্রেতা, দুশ্চিতায় ব্যবসায়ী। নিজস্ব চিত্র
এক সময়ে ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছিল বার্ড ফ্লু-র জেরে। এ বার স্রেফ করোনাভাইরাসের গুজবে ক্ষতির সম্মুখীন পোলট্রির মুরগি ব্যবসা। কমছে মাংসের চাহিদা। দামও কমছে মাংসের। গত এক সপ্তাহে কিলো প্রতি ৩০-৪০ টাকা দাম কমেছে বলে জানাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা।
ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, বারুইপুর, সোনারপুর-সহ বিভিন্ন বাজারেই গত কয়েক দিনে পোলট্রির মুরগির দাম যথেষ্ট নিম্নমুখী। গ্রামাঞ্চলের থেকে শহরাঞ্চলে ব্যবসা বেশি মার খাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত এক সপ্তাহে ক্যানিংয়ের বাজারে কিলো প্রতি ৩০ টাকা করে দাম কমেছে মুরগির। বাসন্তী বা গোসবার বাজারে কিলো প্রতি ২০-২২ টাকা দাম পড়েছে। বারুইপুর, সোনারপুরে অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে কিলো প্রতি মুরগির দাম কমেছে ৩৫-৪০ টাকা। বর্তমানে বারুইপুরে ৯০-১০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে পোলট্রির মুরগির মাংস। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার বাজারে দাম ১১৭-১৩০ টাকা কিলো।
ব্যবসায়ীরা দাবি, ভরা বিয়ের মরসুমে বরং দাম বাড়ে। কিন্তু এ বার মুরগির মাংসের সে রকম চাহিদাই নেই। গত কয়েক দিনে বিক্রি প্রায় অর্ধেক হয়েছে।
পোলট্রি ব্যবসায়ী আশুতোষ দাস বলেন, ‘‘মুরগির মাংস থেকে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি। এই মাংস খেয়ে কোথাও কেউ সমস্যায় পড়েননি। মানুষ অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। ফল ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের।’’
কিছু বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অনেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে মেনু পরিবর্তন করেছেন। কেউ শুধু মাছ রাখছেন। কারও আবার মুরগির মাংসের পরিবর্তে পাঁঠার মাংস করতে গিয়ে বাজেট বাড়ছে অনেকটাই। ১১ মার্চ ক্যানিংয়ের বাসিন্দা নিরঞ্জন মণ্ডলের ছেলের বিয়ে। বৌভাতে নিমন্ত্রিতদের মুরগির মাংস খাওয়াবেন বলে ঠিক করলেও পরে খাদ্য তালিকায় বদল এনেছেন। নিরঞ্জন বলেন, “ভাইরাসের ভয়ে অনেকে পোলট্রির মুরগি খেতে চাইছেন না। তাই পাঁঠার মাংসের অর্ডার দিয়েছি। এ জন্য কমবেশি প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে।’’ ওই দিনই ক্যানিংয়ের বাসিন্দা অর্ধেন্দু দাসের বিয়ে। অর্ধেন্দু অতিথি আপ্যায়নের খাদ্য তালিকা থেকে পোলট্রির মুরগি বাদ দিয়েছেন। জানালেন, পাঁঠার মাংস কিনতে অনেক খরচ। শুধু মাছই করা হচ্ছে।
কিন্তু এ সবই তো নেহাত গুজবের জের। কিন্তু সে কথা লোকে বুঝলে তো হয়! সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে নানা পোস্ট। সেখান থেকেই গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ অনেক ব্যবসায়ীর। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা শাখার সম্পাদক বিধান সাহা বলেন, ‘‘গুজবের জেরে মানুষ আতঙ্কিত হওয়ায় ব্যবসা মার খাচ্ছে। আমাদের সংগঠন, সরকার সকলে মিলে এই সমস্যা থেকে কী ভাবে বের হওয়া যায়, তার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে পারলেই সমস্যা মিটে যাবে।”
বারুইপুর জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারিও চালানো হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়ে কেউ কোনও গুজব ছড়ালে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy