জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে মাতৃত্বকালীন টাকা না পেয়ে বিডিওর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
মাতৃত্বকালীন প্রসবের এককালীন ভাতা না পেয়ে বিক্ষোভ দেখালেন মহিলারা। বিডিওর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ চলে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড় ২ ব্লকের জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতাল চত্বরে।
ওই মায়েদের অভিযোগ, সন্তান প্রসবের পরেও এককালীন ৫ হাজার টাকা ভাতা তাঁরা পাচ্ছেন না। হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত আশাকর্মীদের একাংশ ওই টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে ৪০০-৫০০ টাকা কমিশন চাইছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। যাঁরা ওই টাকা দিতে অস্বীকার করছেন, ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
এ দিন জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে ডেঙ্গি সচেতনতা নিয়ে কর্মসূচি ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সচিব প্রিয়া মুখোপাধ্যায়, ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায়, পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ কাশেফুল করুব খান। র্যালিও বেরোয়। পরে হাসপাতালে আলোচনা শিবিরের আয়োজন করা হয়। বিডিও সেখানে এলে বেশ কয়েক জন মহিলা প্ল্যাকার্ড নিয়ে গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। গাড়ির সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে বিডিও অভিযোগ শোনার পরে সকলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপরে মায়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও মা প্রথম সন্তান প্রসবের পরে মাতৃত্বকালীন এককালীন ৫ হাজার টাকা ভাতা পান। কোনও মায়ের যদি দ্বিতীয় কন্যাসন্তান হয়, তা হলেও তিনি এককালীন ওই টাকা পান। অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে সন্তান প্রসবের পরেও কোনও কোনও মহিলা টাকা ঠিক মতো পাচ্ছেন না।
ওই টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘বাংলার মাতৃ প্রকল্প’ অ্যাপে সমস্ত তথ্য আপলোড করা হত। পরে মায়েদের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যেত। ২০২১-২২ সালে অ্যাপ বন্ধ হয়ে যায়। সে সময়ে অ্যাপে সমস্যার কারণে মায়েরা ঠিক মতো টাকা পাচ্ছিলেন না। যে কারণে অনেকেই হতাশ হয়ে সে সময় ওই টাকার জন্য আবেদন করেননি।
২০২৩ সালে বাংলা মাতৃ প্রকল্প উঠে গিয়ে নতুন নাম হয় প্রধানমন্ত্রী মাতৃত্ব বন্ধনা যোজনা (পিএমএমভিওয়াই)। এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় বিএমপি (বাংলা মাতৃত্ব প্রকল্প)। কিন্তু ওই সময়ে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁরা টাকা পেলেও যাঁরা আবেদন করেননি তাঁরা টাকা পাননি। এ দিন ওই টাকা না পেয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কিছু মহিলা।
শাহানা পরভিন নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘২০২১ সালের ১৭ মার্চ আমার সন্তান হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ৫ হাজার টাকা ভাতা পাইনি। আশাকর্মীদের বললে তাঁরা বলেন, ওই টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অথচ, পাশের বাড়ির কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে তাঁর ওই টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। আমার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, বাচ্চার বয়স ৫৭০ দিন পার হয়ে গিয়েছে। তাই ওই টাকা পাওয়া যাবে না।’’
এ বিষয়ে বিডিও বলেন, ‘‘কয়েক জন মা মাতৃত্বকালীন প্রসবের টাকা না পেয়ে আমাকে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হিরন্ময় বসু বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে রাখার জন্য জেলার নির্দেশ অনুযায়ী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশাকর্মীদের বিরুদ্ধে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy