নিজেদের ভাঙা ঘরের সামনে দম্পতি। ছবি: সুদীপ ঘোষ ।
প্রায় কুড়ি বছর ধরে সরকারি ঘরের জন্য প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে আবেদন-নিবেদন করেছেন। কিন্তু ঘর মেলেনি দেগঙ্গার বাসিন্দা দৃষ্টিহীন নুর মহম্মদের। নুর জানান, ভোট আসে, ভোট যায়, নেতা-প্রার্থীরা ভোট চাইতে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়। কিন্তু ঘর মেলে না। ঘরের পাশাপাশি অন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধাও মেলে না বলেও অভিযোগ নুরের। দুয়ারে সরকারের শিবিরে গিয়েও সুরাহা হয়নি বলে দাবি তাঁর।
দেগঙ্গা গ্রামে মাটির ঘরে প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে কোনও রকমে বাস করেন নুর। বৃষ্টি হলে আশ্রয় নিতে হয় প্রতিবেশীদের বাড়িতে। গবাদি পশু পালন করে কিছু আয় হয়। তাই দিয়েই সংসার চলে। দম্পতি জানান, বাম আমল থেকে ঘরের জন্য আবেদন করে আসছেন। দু’দশকে আশেপাশের অনেককেই ঘর পেতে দেখেছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের ঘর মেলেনি। এমনকী, স্ত্রী গোলবানু বিবি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা পান না বলে দাবি নুরের। ষাট পেরোলেও তাঁর বার্ধক্যভাতা জোটে না বলেও অভিযোগ করেন।
নুর বলেন, “বার বার পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস এবং দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন করেছি। ভোট চাইতে এলে নেতা-প্রার্থীদের বলেছি। তাঁরা আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন। ওই আশ্বাস পেয়েই বেঁচে আছি। সরকার আমাদের কিছু না দিলেও, আমি কিন্তু জমির ট্যাক্স বাকি রাখিনি।” গোলবানু বিবি বলেন, “ঘর প্রায় পুরোটাই ভেঙে গিয়েছে। কিছু বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। ভোট চাইতে এসে নেতারা বলেছিল, ভোট মিটলেই সরকারি সুযোগ-সুবিধা, আবাসের ঘর সব মিলবে। জানি না কবে দেবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা আজিদা বিবি, রমিচা বিবিরা বলেন, “ওরা গ্রামের একমাত্র অসহায় পরিবার। তবু সরকারের থেকে ঘর, ভাতা কিছুই পায় না। আমরা পাই, তবু ওরা কেন পান না জানি না। এটা নিয়ে আলোচনাও করি নিজেদের মধ্যে।”
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, “ওঁদের দাবি সত্যি। পরিবারটি অসহায়। আগের পঞ্চায়েত কেন তাঁদের কিছু দেয়নি, বলতে পারব না। আমি এ বার পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছি। ইতিমধ্যেই অসহায় দম্পতির হয়ে আবেদন করেছি পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিসে।” দেগঙ্গার বিডিও ফাহিম আলম বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। ওঁরা এত দিন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকলে, সেগুলি দেওয়ার চেষ্টা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy