Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বিজেপির ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’,  পোস্টার পড়ল দেওয়ালে

বিজেপির এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, বসিরহাট লোকসভার প্রার্থী তথা বিজেপি নেতা সায়ন্তন নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য পার্টি ফান্ড থেকে ২ কোটি টাকার বেশি পেয়েছিলেন।

বিতর্ক: এই পোস্টার ঘিরেই শুরু হয়েছে তরজা। —নিজস্ব চিত্র

বিতর্ক: এই পোস্টার ঘিরেই শুরু হয়েছে তরজা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০৮:৪৩
Share: Save:

ফের একবার বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল।

লোকসভা নির্বাচনী খরচের জন্য দলের দেওয়া টাকার বড় অংশ আত্মসাতের অভিযোগ উঠল কয়েকজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতৃত্বেরই একাংশ এই অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বসিরহাটের দেওয়ালে পোস্টার পড়েছে। ওই পোস্টারের তলায় ‘বিজেপি কর্মীবৃন্দ’ বলে লেখা থাকায় অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিজেপির নাম করে বসিরহাট শহরে পোস্টার লাগানো হয়েছে। সেখানে লেখা, ‘বিজেপি-র সায়ন্তন বসুর স্বীকারোক্তি, লোকসভা ভোটে টাকা পেয়েছি ২ কোটির বেশি। তবে কেন টাকা পাননি বুথকর্মীরা? অভিযোগ, সায়ন্তন বসু, গণেশ ঘোষ, দুলাল রায়, ভবতোষ সরকার, সঞ্জীব সরকার আরও অনেকে কাটমানি নিয়েছেন। ভাগ পেয়েছেন রাজ্য নেতা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ও।

বিজেপির এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, বসিরহাট লোকসভার প্রার্থী তথা বিজেপি নেতা সায়ন্তন নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য পার্টি ফান্ড থেকে ২ কোটি টাকার বেশি পেয়েছিলেন। সেই টাকার বেশির ভাগটাই নির্বাচনের কাজে খরচ না করে বিজেপির জেলা সভাপতি সহ কয়েকজন নেতা কাটমানি হিসাবে আত্মসাৎ করেছেন। টাকা যেমন বুথকর্মীরা পাননি, তেমনই খরচের অডিট হয়নি বলেও তাঁদের অভিযোগ।

বসিরহাট লোকসভার প্রার্থী হিসাবে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর নাম ঘোষণার পর থেকে গোষ্ঠী কোন্দল বেড়েছে। ওই সময়ে সায়ন্তনের নামে দলের এক গোষ্ঠীকে পোস্টার মারতে দেখা গিয়েছিল। বিজেপি নেতা তথা বসিরহাট জেলার প্রাক্তন সভাপতি হাজারিলাল সরকার বলেন, ‘‘জেলার মিটিংয়ে সায়ন্তন ২ কোটির বেশি টাকা পাওয়ার কথা বলেছিলেন। ওই টাকার হিসাব নিতে হলে রাজ্য কমিটির কাছে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি। টাকার অভাবে আমরা বুথ এজেন্ট পর্যন্ত বসাতে পারিনি। এখন শুনছি, দলের কয়েকজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষাধিক টাকা ঢুকেছে।’’

এ দিকে, দলীয় টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করে বিজেপির জেলা সভাপতি গণেশ বলেন, ‘‘সায়ন্তন যখন প্রার্থী হয়ে বসিরহাটে এসেছিলেন, তখন যাঁরা বিরোধিতা করে পোস্টার মেরেছিলেন তাঁরাই এখন হতাশ হয়ে নানা মন্তব্য করছেন। মিথ্যা কথা লিখে পোস্টার মারছেন। বিষয়গুলি ইতিমধ্যে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তাঁরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’’ সায়ন্তন বলেন, ‘‘পোস্টার তৃণমূল থেকে মারা হয়েছে। কাটমানি নিয়ে যা হাল হয়েছে, তাতে তৃণমূল এ সব করছে। ভোটের আগেও এমন পোস্টার মারা হয়েছিল। কারা মেরেছিল, তার হদিস এখনও পাওয়া যায়নি।’’ বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস পাল্টা বলেন, ‘‘আসলে কাটমানি কারা নিয়েছে, বিজেপির পোস্টারে তা পরিষ্কার। দলীয় গন্ডগোল ঠেকাতে বিজেপি নেতারা এখন তৃণমূলের উপরে পোস্টারের দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন।’’

বসিরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির কাউন্সিলর তপন দেবনাথের বিরুদ্ধেও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা কাটমানি নিয়েছেন তিনি। বিজেপির বুথ সভাপতি রণজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘উপভোক্তাদের ব্যাঙ্কের পাসবই, আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড নিয়ে রাখা হয়েছে। তপনকে কাটমানি দিতে না পারায় অনেকে ঘর পাননি।’’

যদিও তপন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সকলে নিজের ঘর নিজে করছেন। সরকারি প্রকল্পের কোনও টাকা কারও কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। আসলে দলের সুনাম নষ্টের জন্য তৃণমূলের দালালরা বিজেপির মুখোশ পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Basirhat Cut Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy