Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫

পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ক্যানিংয়ে, গ্রেফতার তিন জন

মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের ৭ নম্বর দিঘিরপাড় এলাকায়। রাতেই গুরুতর জখম অবস্থায় সোমরাই টুডু নামে ওই পুলিশকর্মীকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

দুষ্কৃতী ধরতে গিয়ে তাদের ছোড়া গুলিতেই গুরুতর জখম হলেন এক পুলিশ কর্মী।

মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের ৭ নম্বর দিঘিরপাড় এলাকায়। রাতেই গুরুতর জখম অবস্থায় সোমরাই টুডু নামে ওই পুলিশকর্মীকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিপ্লব সেন নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতী ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের জন্য এলাকায় নাকা তল্লাশি চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত বিপ্লব। মূলত এলাকার একটি যৌনপল্লি থেকে তোলাবাজি, ট্রেন, বাসে চুরি-ছিনতাই যাওয়া সোনার গয়না ও দামি জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয় ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজও করে অভিযুক্ত বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের খাতায় একাধিক অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশ জানিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে এলাকার এক গৃহবধূ শম্পা মণ্ডলকে খুনের অভিযোগও রয়েছে বিপ্লবের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই নিহত গৃহবধূর স্বামী নিতাই মণ্ডলের উপর আচমকা লোকজন নিয়ে চড়াও হয় বিপ্লব। তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দেয় অভিযুক্ত। ঘটনার প্রতিবাদ করেন স্থানীয় মানুষ। এরপর মঙ্গলবার রাতে এলাকায় লোকজন নিয়ে এসে তাণ্ডব শুরু করে বিপ্লব। স্থানীয় দু-একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় সে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। আক্রান্তরা ক্যানিং থানায় অভিযোগ করেন।

মঙ্গলবার রাতেই ক্যানিং থানার পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্তের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। সেই সময় একটি বাইকে করে দুই সঙ্গীর সঙ্গে বিপ্লব ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ তাকে ধরতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করেই গুলি চালায় সে। গুলি গিয়ে লাগে সোমরাইয়ের বাঁ পায়ের তালুতে।

অন্য পুলিশকর্মীরা আহত সঙ্গীকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে সেই সুযোগেই পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। এরপর রাতভোর অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালালেও কোনও খোঁজ মেলেনি তার।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিগত বেশ কিছু বছর ধরেই এই এলাকায় সাধারণ মানুষের ত্রাস হয়ে উঠেছে বিপ্লব। পুলিশের খাতায় একাধিক অভিযোগ থাকলেও তার মাথায় স্থানীয় কয়েকজন শাসকদলের নেতার হাত থাকায় দিনের পর দিন এলাকায় সমাজ বিরোধী কাজ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে বিপ্লব।

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা ক্যানিং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়ি। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় সমাজ বিরোধী কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত বিপ্লব। পুলিশ সবটাই জানে। তবুও কেন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে না জানি না।

তবে এ বার নিশ্চয় পুলিশের টনক নড়বে। তৃণমূল কখনও এই ধরনের সমাজ বিরোধীদের সহ্য করে না।’’ যদি কোনও নেতার সঙ্গে তার সম্পর্ক থেকে থাকে তা তাঁদের নিতান্তই ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে জানান তিনি।

ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু ও এসডিপিও ক্যানিং দেবীদয়াল কুণ্ডুর নেতৃত্বে এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোট তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’টি মোটর বাইক ও একটি টোটো আটক করা হয়। যদিও ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিপ্লবকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Canning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy