Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Dholahat Death Case

হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে হবে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত, সুন্দরবনের ঢোলায় কবর থেকে দেহ তুলল পুলিশ

মৃত যুবককে নিজেদের দলীয় কর্মী বলে দাবি করে থানা ঘেরাও করে বার বার বিক্ষোভে দেখিয়েছে আইএসএফ। মৃতের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আইএসএফ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সুন্দরবন  শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ ১১:২৮
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সুন্দরবনের ঢোলার যুবক আবু সিদ্দিকি হালদারের দেহের দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হল। শনিবার সকালে ঢোলাহাট থানার পুলিশ আবুর গ্রাম হাটবকুলতলায় যায়। কবর থেকে দেহ তোলার কাজ শুরু করে। ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ।

পুলিশি হেফাজতে পুলিশের মারে যুবকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবারের লোকজন। ঘটনার সঠিক তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন আবুর পরিবারের লোকজন। সেই ঘটনায় আবুর দেহ দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন বিচারপতি। শনিবার সকালে যখন কবর থেকে দেহ তোলার কাজ শুরু করে পুলিশ, তখন এলাকার লোকজন জড়ো হন। পরিবারের আশা, বিচার মিলবে।

মৃত আবুকে নিজেদের দলীয় কর্মী বলে দাবি করে থানা ঘেরাও করে বার বার বিক্ষোভে দেখিয়েছে আইএসএফ। নিহত যুবকের বাবা, কাকা এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আইএসএফ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সুন্দরবন পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (জোনাল) কাছে থানার আইসি, তদন্তকারী অফিসার-সহ আরও এক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই দিনই পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে মৃতের পরিবার। মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। মৃত যুবকের বাবা ইয়াসিন হালদার বলেন, ‘‘বিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আমার ছেলের হত্যাকারীরা যেন শাস্তি পায়।” সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট জানান, পরিবারের লোকজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত চলছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ঢোলাহাট থানার ঘাটবকুলতলা এলাকার বাসিন্দা আবুর। দিন কয়েক আগে একটি চুরির ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশি হেফাজতে ওই যুবককে মারধর, অত্যাচার করা হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একের পর এক হাসপাতাল ঘোরার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ জুন ঢোলাহাটের ঘাটবকুলতলা এলাকায় আবুর কাকার বাড়িতে চুরি হয়। সেই ঘটনায় থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। মৃত যুবক জামিনে মুক্ত হলেও বাকি দু’জন নাবালক বলে তাদের বারুইপুর জুভেনাইল বোর্ডে পাঠানো হয়। গত ৪ জুলাই তিন জনকে আদালতে তোলার আগে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে চিকিৎসক ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দেন বলে পুলিশের দাবি।

যে কাকার বাড়িতে চুরির অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল আবুকে, সেই মহসিন হালদার বুধবারও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, জোর করে ভাইপোর বিরুদ্ধে এফআইআরের কাগজে সই করিয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, “এলাকার দু’জন ছেলে আমার বাড়িতে চুরি করে। পুলিশ তাদের ধরে। তবুও ভাইপোকে জোর করে তুলে নিয়ে গেল। আমাকে থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে জোর করে এফআইআর কপিতে সই করিয়ে নেয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘৪ জুলাই আদালতে যখন ভাইপোকে দেখি, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফেটে গিয়েছে। কথা বলার অবস্থায় নেই। তা সত্ত্বেও পুলিশ জেল হেফাজতে নিতে চাইছিল। আমি উকিল ঠিক করে জামিন করিয়ে বাড়ি নিয়ে আসি। পরে ওকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।” সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন মহসিন।

বুধবার দুপুরে মৃত যুবককে কবরস্থ করা হয়েছিল। তখন পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি ও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Dholahat Calcutta High Court Post Mortem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy