—প্রতীকী চিত্র।
হাওড়ায় সোনার দোকানে ডাকাতির আগে বিহারে একাধিক ডাকাতি, খুন ও ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল ‘চাচি’র দল। তা সত্ত্বেও এত দিন দলটির নাগাল পায়নি সেখানকার পুলিশ। সদ্য গজিয়ে ওঠা দলটির এক-এক জনের মাথার দাম উঠেছিল ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা!
ডোমজুড়ের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ধৃত ‘চাচি’ আশা ও অলোক পাঠককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হাওড়ায় ডাকাতি করতে আসার আগে বিহারে দু’টি সোনার দোকানে ডাকাতি করেছিল চাচির এই দলটি। এর পরে একটি ছিনতাই
করতে গিয়ে জোড়া খুন করে ফেলায় বিহার ছেড়ে চাচি তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রবীন্দ্র সাহানি ও মণীশ মাহাতোকে নিয়ে দিনমজুরের ছদ্মবেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে পালিয়ে এসেছিল এ রাজ্য়ে। আশ্রয় নিয়েছিল আসানসোলের হীরাপুরের ৩ নম্বর মহিশীলা কলোনির একটি ভাড়া বাড়িতে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, সেখানেই হাওড়ার সোনার দোকানে ডাকাতির ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরি হয়েছিল। ডাকাতির পরিকল্পনায় চাচির পাশাপাশি নেতৃত্ব দিয়েছিল রবীন্দ্র। প্রায় তিন মাস ওই বাড়িতে থাকার পরে চাচি ফিরে গিয়েছিল বিহারের সমস্তিপুরে, নিজের বাড়িতে।
ওই ডাকাতির ঘটনায় ধৃতদের বৃহস্পতিবার হাওড়া আদালতে পেশ করা হলে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এর পরেই শুক্রবার দিনভর চাচি ও অলোককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অলোক তদন্তকারীদের সাহায্য করলেও চাচি মুখে কুলুপ এঁটেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করলেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে সে। চাচির দাবি, সে চাষাবাদ করা, ছাপোষা এক জন গৃহবধূ। ডাকাতি সম্পর্কে কিছুই জানে না। বাকিদেরও চেনে না।
তবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হাওড়ায় ডাকাতি করতে আসার আগে, এ বছরের প্রথম দিকে এই দলটি বেগুসরাই, লক্ষ্মীসরাইয়ে পর পর দু’টি দুঃসাহসিক ডাকাতি করে। এর পরে একটি ছিনতাই করতে গিয়ে জোড়া খুন করে ফেলে তারা। ওই ঘটনার পরেই বিহার পুলিশ দলটিকে ধরতে মরিয়া হয়ে ওঠায় সকলে গা-ঢাকা দিতে চলে আসে আসানসোলে।সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে চাচিই।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চাচির সঙ্গে আর এক ধৃত রবীন্দ্রের একটা সম্পর্ক রয়েছে। তারা দু’জনে মিলেই ডাকাত দলটি তৈরি করেছিল। ডাকাতির জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ডাকাতি হওয়ার পরে ঠিক কোথায় সোনার ব্যাগ রবীন্দ্রের হাতে তুলে দিতে হবে, তা ঠিক করেছিল রবীন্দ্র নিজেই। এ বার তাকে বিহার থেকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে হাওড়ায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই ডাকাতির সোনার হদিস মিলবে। সেই সঙ্গে মিলবে চাচির দল সম্পর্কে অন্য একাধিক তথ্যও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy