প্রতীকী ছবি।
মহিলার গলার নলি, হাত-পায়ের শিরা কেটে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। তাঁর ছেলেকেও শ্বাসরোধ করে খুন করে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে ঢোলাহাটের শিবনগর থেকে মানোয়ার পাইক ও বেজপুকুর থেকে মোজাম্মেল নাইয়া নামে ওই দু’জনকে ধরে পুলিশ। শনিবার কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
১২ অগস্ট সন্ধ্যায় শিবনগর গ্রামে ঘরে ঢুকে মঞ্জুরা বিবিকে গলা কেটে খুন করা হয়। তাঁর তিন বছরের ছেলে মিজানুর হোসেন পাইকের নাক-মুখ টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল দেহ।
সে সময়ে ঘরে ছিল মঞ্জুরার বড় ছেলে মিরাজ। সে ভয়ে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুয়ে ছিল। তবে চার আততায়ীকে বেরিয়ে যেতে দেখে বলে জানিয়েছিল পুলিশকে। একজনকে দু’জনকে চিনতেও পারে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত এগোয় পুলিশ।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, শিবনগর গ্রামের তৃণমূল নেতা আনোয়ার পাইকের দুই স্ত্রী। মঞ্জুরাকে পরে বিয়ে করেছিলেন আনোয়ার। দুই ছেলেকে নিয়ে মঞ্জুরা বাঁধের উপরে মাটির ঘরে থাকতেন। কিছু দূরে মানোয়ারা পাইক নামে আনোয়ারের আর এক স্ত্রী ছয় ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকে।
মিরাজ পুলিশকে জানায়, আততায়ীদের দলে বাবার প্রথম পক্ষের ছেলে মানোয়ারকে সে দেখেছে। তার উপরে নজর রাখতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। বছর উনিশের যুবকের মোবাইল ফোনের লোকেশন খতিয়ে দেখা হয়। জানা যায়, খুনের কিছুক্ষণ আগে থেকে তার ফোন বন্ধ ছিল। তাতে পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সৎমা মঞ্জুরার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভাল ছিল না। তা ছাড়া, আনোয়ার সম্পত্তির প্রায় ৭৫ শতাংশ লিখে দিয়েছিলেন মঞ্জুরাকে। তার মাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে মনে করত মানোয়ার।
কিন্তু মোজ্জাম্মেল এই ঘটনায় জড়াল কেন?
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মোজাম্মেল ও মঞ্জুরার বাপের বাড়ি বেজপুকুর গ্রামে। জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ ছিল দুই পরিবারের। তারও রাগ ছিল মঞ্জুরার উপরে। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের ছক কষেছিল মানোয়ারা। সে কথা জানতে পেরে ষড়যন্ত্রে যোগ দেয় মোজাম্মেলও।
তদন্তকারীদের সে জেরায় জানিয়েছে, ডাব কাটার ধারাল কাটারি দিয়ে খুন করা হয় মঞ্জুরাকে। চারজন ছিল সেই দলে। পলাতক দু’জনের কারও কাছে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র আছে বলে জানিয়েছে ধৃতেরা। খুনের পরে মানোয়ার বাকি তিনজনকে জানিয়েছিল, সে ঘটনাস্থলে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়বে। জ্ঞান হারানোর নাটক করবে। এ সব করলে পুলিশের সন্দেহ হবে না তাকে। বাকি তিনজনকে অন্য জায়গায় পালিয়ে যেতে বলেছিল মানোয়ার।
কিন্তু তিন বছরের শিশুটিকে কেন খুন করল আততাতীরা? পুলিশ মনে করছে, মায়ের খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় তাকে খুন করা হয়। মুখের ঢাকা সরে গিয়েছিল মোজাম্মেলের। শিশুটি তাকে চিনত। মামা বলে ডাকত। অন্য ঘরে মিরাজ গায়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকায় তাকে দেখতে পায়নি আততায়ীরা। বেঁচে যায় সে।
সুন্দরবন জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, জোড়া খুনের কিনারা করতে ৫ জন পুলিশ আধিকারিককে নিয়ে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত দু’জনকে ধরা গেলেও বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy