প্রতীকী ছবি।
কম দামে ইঞ্জিন ভ্যান পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে বনগাঁ থানার পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল। সোমবার রাতে বনগাঁ শহরের নেতাজি মার্কেট এলাকা থেকে সুমন সাধু নামে ওই ব্যক্তিকে পুলিশ ধরে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বাড়ি বনগাঁর আমলাপাড়া এলাকায়। মঙ্গলবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের মানুষের কাছে সুমন নিজেকে কখনও শুল্ক দফতরের অফিসার, আদালতের মুহুরি, ব্যাঙ্ক কর্মী বলে পরিচয় দিত। গ্রামের মানুষকে কম দামে ইঞ্জিন ভ্যান পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। সেই সূত্রেই টাকা হাতিয়ে নিত বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে সুমন গিয়েছিল বনগাঁর মণিগ্রাম এলাকার শিবপুর গ্রামে। সেখানে সত্যজিৎ প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ জমিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। নিজেকে আদালতের মুহুরি হিসেবে পরিচয় দেয়। সত্যজিৎকে সে জানায়, শুল্ক দফতরের অফিসারদের সঙ্গে তার ওঠাবসা। দফতরে প্রচুর ইঞ্জিন ভ্যান আটক করা হয়েছে। সত্যজিৎ চাইলে সে কম দামে একটি ইঞ্জিন ভ্যানের ব্যবস্থা করে দিতে পারবে।
পেশায় চাষি সত্যজিতের ভ্যানের প্রয়োজন ছিল। তিনি রাজি হয়ে যান। সুমন তাঁর কাছে ২২ হাজার টাকা দাবি করে। দু’একদিনের মধ্যে সুমন হাজির হয় সত্যজিতের বাড়িতে। সেখানে বেশ কিছু কাগজে সত্যজিতকে দিয়ে সই করায়। এরপরে সত্যজিতের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে তাঁর সামনে একটি খামে ভরে মুখ আঠা দিয়ে আটকে দেয়।
সুমন জানায়, রেভিনিউ স্ট্যাম আনা হয়নি। সে সব কিনে ফিরবে। এই বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সুমন। টাকা-ভর্তি খাম সত্যজিতের বাড়িতেই ছিল। অনেক্ষণ কেটে গেলেও সুমন না ফেরায় সত্যজিৎ টাকা-ভর্তি খামটি খোলেন। দেখেন, সেখানে কোনও টাকা নেই। কয়েকটি কাগজপত্র রয়েছে। সত্যজিৎ বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।
পুলিশ জানিয়েছে, একই রকম আরও একটি খাম সুমন নিজের সঙ্গে রেখেছিল। সত্যজিতের চোখ ফাঁকি দিয়ে সে টাকা-ভর্তি খামটি নিয়ে নকল খাম রেখে বেপাত্তা হয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক মাস আগেও সুমন আর্থিক প্রতারণার ঘটনায় বনগাঁ থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। পরে জামিনে ছাড়া পায়। সে সময়ে নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানতে পেরেছে, সাইকেল নিয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে সুমন লোকজনকে ‘টার্গেট’ করত। মে কাদের ইঞ্জিন ভ্যানের দরকার, সেই খোঁজ করত। তার পরে পৌঁছে যেত তাঁর বাড়িতে।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি সুমন আরও কয়েকটি আর্থিক প্রতারণার ঘটনা ঘটিয়েছে। অভিযোগ, গরিব পরিবারের মহিলাদের সে ব্যাঙ্কে রান্নার কাজে নেওয়ার টাকা আত্মসাৎ করেছে। মহিলাদের কাছ থেকে ওই কাজের জন্য সে মাথা-পিছু ৩ হাজার টাকা করে নিয়েছে। মহিলাদের সে বলত, তাঁদের রান্নার কাজের জন্য শাড়ি কিনতে হবে। সে জন্য ৩ হাজার টাকা করে লাগবে। সুমনের গ্রেফতারের কথা জানতে পেরে কয়েক জন মহিলা থানায় এসে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy