ধৃত বাংলাদেশিরা। হলুদ চাদরে তছলিমা। নিজস্ব চিত্র।
ধর ধর ধর....।
মহিলার দিকে ধেয়ে আসছিল পুলিশ। দেওয়ালের গায়ে কোণঠাসা মহিলা বুঝে নেয়, পালানোর পথ বন্ধ। অতএব...
পুলিশ কর্মীদের চোখের সামনেই নিজের কোঁচড় থেকে মোবাইল বের করে নিমেষে সেখান থেকে বের করে নিল সিমকার্ড। তারপরেই খপাত!
সিম কার্ড সোজা মুখে। চিবিয়ে খেয়ে ফেলার সে এক প্রবল চেষ্টা। কিন্তু পুলিশ কর্মীরাও মহিলাকে চেপে ধরে মুখ থেকে বের করেন আনেন সেই সিমকার্ড।
নালে-ঝোলে ভেজা সেই কার্ডটিই এখন তদন্তকারী অফিসারদের কাছে তুরুপের তাস। কী লুকোতে চেয়ে মহিলার এ হেন মরিয়া চেষ্টা, তা ভাবাচ্ছে পুলিশ কর্মীদের। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, মহিলা দীর্ঘ দিন ধরে ধুর পাচারের (সীমান্তের এক পার থেকে অন্য পারে মানুষ পারাপারের কাজ) কাজে জড়িত। মোবাইলের সিমে অনেক দুষ্কৃতীর ফোন নম্বর থাকতে পারে।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটে।
কী হয়েছিল? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘোজাডাঙা সীমান্তের দিক থেকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছিল একটি গাড়িটি। বসিরহাটের ইছামতী সেতুতে তার পথ আটকান টহলদারি পুলিশকর্মীরা। তারপরেই চমক।
গাড়ি দরজা খুলে এ দিক ও দিক ছুটতে শুরু করে যাত্রীরা। তাদের মধ্যে অনেকেই মহিলা। তাদের কোনও মতে পাকড়াও করে আনে পুলিশ। কিন্তু ততক্ষণে বোঝা গিয়েছে, অন্তত এক মহিলা হাতছাড়া। শুরু হয় খোঁজ খোঁজ। ততক্ষণে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ইছামতীর পাড়ে নৈহাটি এলাকার এক বাড়িতে। গায়ে হলুদ চাদর জড়ানো আটপৌরে চেহারার এক মহিলা আচমকাই সেঁধিয়ে পড়েছে সেখানে। বাড়ির লোকজনও থতমত।
পুলিশ পরে জানতে পারে, ওই মহিলা দাবি করে, সে বসিরহাট শহরের বাসিন্দা। কয়েকজন দুষ্কৃতী তার পিছু নিয়েছে। তাই সে আশ্রয় চাইছে। গৃহকর্তার কাছে কয়েক হাজার টাকা রাখারও অনুরোধ করে ওই মহিলা। কিন্তু তার আচরণে সন্দেহ হওয়ায় বারান্দায় বসিয়ে রেখে গৃহকর্তা ফোন করেন থানায়। পুলিশ দ্রুত চলে আসে। বিপদ বুঝে মোবাইলের সিম খুলে মুখে ঢুকিয়ে দেয় ওই মহিলা।
তছলিমা বিবি নামে ওই মহিলা-সহ ১১ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের সঙ্গে একটি শিশু রয়েছে। প্রত্যেকেই ওই গাড়িতে ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা সকলেই বাংলাদেশি। তছলিমার বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষিরার কলোরোয়া গ্রামে।
বর্তমানে সে কলকাতার দুর্গানগরের মানিকপুরে থাকে। তার থেকে মোবাইলের ওই সিম-সহ ফোন, ভারতীয় মুদ্রায় ২৭ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বছর দ’শেক আগে তছলিমা ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করে। পর নিজেই ধুর পাচারে জড়িয়ে পড়ে। কলকাতার দুর্গানগরের বাড়ি থেকেই সে পুরো ‘নেটওয়ার্ক’ চালাত। ধৃতেরা জানায়, তাদের থেকে তছলিমা মোট ১৫ হাজার টাকা নিয়েছিল। কথা ছিল, অবৈধ ভাবে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় পৌঁছে দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy