সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
কথা ছিল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু করে ধীরে ধীরে পরিকাঠামো বাড়ানো হবে। কিন্তু সেই ঘোষণার উল্টো ছবিই দেখা গেল কাকদ্বীপে। সংখ্যা বাড়ানোর বদলে এখান থেকে একের পর এক চিকিৎসক কমছে। গত মাসে আরও দুই চিকিৎসককে এখান থেকে বদলি করা হয়েছে। এই নিয়ে গত কয়েক মাসে ৫ জন চিকিৎসক কমেছে কাকদ্বীপ হাসপাতালে। আরও কয়েকজনের চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
চিকিৎসক কমতে থাকায় ঠিক মতো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করছেন কর্মরত বাকি চিকিৎসকেরা। তৈরি করা যাচ্ছে না ‘ডিউটি রোস্টার।’ সামান্য কারণেই রোগীকে রেফার করে দিতে হচ্ছে। ময়না-তদন্ত করা যাচ্ছে না। পুরোপুরি চালু করা যায়নি ব্লাড ব্যাঙ্কটিও। উল্টো দিকে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে সুপার স্পেশালিটি এই হাসপাতালে। রোগীর সংখ্যা বাড়লেও স্বাস্থ্য দফতরের নতুন নির্দেশে মেডিসিন বিভাগের দুই চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। অথচ নতুন কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। বর্তমানে ওই বিভাগে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। শুধু তাই নয়, একজন অ্যানাস্থেটিস্টকেও ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে চলবে হাসপাতাল?
এক প্রবীণ চিকিৎসক বলেন, ‘‘হাসপাতাল চালু করার পরে চিকিৎসক কমিয়ে দেওয়ার মানে হল, একজনের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি হওয়া। কিন্তু পরিষেবা ঠিক মতো না পেলে রোগীর পরিজন ঝামেলা পাকান। কিন্তু নিরাপত্তা নেই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৫-৬ মাসে কাকদ্বীপ হাসপাতালে তিনটি গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ছোটখাট গোলমাল প্রতিদিনই লেগেই রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই সব গোলমালের জেরে কোনও চিকিৎসক কাকদ্বীপে আসতে চাইছেন না। চিকিৎসক কমলে পরিষেবা পেতে সমস্যা হবে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অবশ্য যুক্তি, ‘‘যতজন ডাক্তার হাসপাতালে রয়েছেন, তাঁরা যদি পূর্ণ সময় হাসপাতালেই দেন, তা হলে সব পরিষেবা চালানো সম্ভব। আগে পূর্ণ পরিষেবা দেওয়া হোক, নিয়োগের ব্যাপারটি আমরা শীঘ্রই দেখছি।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, যে কোনও একটি সুপার স্পেশালিটি বিভাগ থাকলেই তাকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বলা যায়। কাকদ্বীপে একমাত্র চক্ষু বিভাগই সুপার স্পেশাল। সেখানে সম্প্রতি তিন জনের মধ্যে একজন চিকিৎসক ছেড়ে চলে গিয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ন্যূনতম ৬৫ জন। রয়েছেন ৪৬ জন। নার্স থাকার কথা ১০০। আছেন ৭২ জন। ৩৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে আছেন ১৫ জন।
সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘এ ভাবে চললে মানুষ পরিষেবা পাবেন কী ভাবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy