Advertisement
E-Paper

পানিহাটির পরিষেবা নিয়ে বৈঠকের ডাক, বদল কি পুরপ্রধানে

নাগরিক পরিষেবার নিরিখে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে পানিহাটি পুরসভা। লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগের তিরে বিদ্ধ শতাব্দীপ্রাচীন এই পুরসভা।

পানিহাটি পুরসভা।

পানিহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৪ ০৬:১৫
Share
Save

নাগরিক পরিষেবার নিরিখে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে পানিহাটি পুরসভা। লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগের তিরে বিদ্ধ শতাব্দীপ্রাচীন এই পুরসভা। একই রকমের অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছিল খোদ শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিদের গলাতেও। কেন এই হাল, তা খতিয়ে দেখতে এ বার সমস্ত পুরপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের বৈঠকে ডাকলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

আগামী ১৫ জুন পানিহাটি পুরসভায় এই বৈঠক হওয়ার কথা। অন্য দিকে, পুরপ্রধান মলয় রায়ের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব খোদ শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিরাই। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষও বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছেন, পুরপ্রধান অসুস্থ। উল্লেখ্য, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে এ বারের লোকসভা ভোটে পানিহাটি পুর এলাকায় শাসকদলের ভোট কমেছে প্রায় ১৫ হাজার। যার নেপথ্যে বেহাল নাগরিক পরিষেবাকেই মূল কারণ বলে মনে করছেন তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধিদের একাংশ। এমতাবস্থায় পুরমন্ত্রীর এই পর্যালোচনা বৈঠক ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল, পুরপ্রধান বদল নিয়ে চলছে চাপা গুঞ্জন। কিন্তু সেই চেয়ারের দখল কে নেবেন, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। আর বিরোধীদের প্রশ্ন, পানিহাটিতে পরিবারতন্ত্রের ছায়া বিদ্যমান থাকবে না তো?

যদিও পুরপ্রতিনিধিদের অনেকেই বলছেন, ‘‘এটা পুরপ্রধান বদলের বৈঠক নয়। আর, যদি তা শেষ পর্যন্ত হয়ও, সে বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ তবে, মাসকয়েক আগে পানিহাটির পুরপ্রধানের বদল চেয়ে শাসকদলের যে ৩২ জন পুরপ্রতিনিধি দলের শীর্ষ স্তরে চিঠি দিয়েছিলেন, তাঁদের একটি বড় অংশ পরিবারতন্ত্রের পক্ষে নন। আর, স্থানীয় বিজেপি নেতা কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কে, কার বাড়ির লোককে পুরপ্রধানের চেয়ার উপহার দেবেন, সেই লড়াই বন্ধ রেখে নাগরিক পরিষেবায় জোর দেওয়া প্রয়োজন। তবে পুরপ্রধান বদল নিয়ে শাসকদলের অন্দরেই এ বার খেলা হবে।’’

বিগত ছ’মাস ধরে পানিহাটি পুরসভায় বোর্ড মিটিং বন্ধ। তার ফলে কার্যত থমকে রয়েছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ। অনিয়মিত পানীয় জল সরবরাহ, নিকাশির সংস্কারের অভাবে জল জমা, বাসিন্দাদের আন্দোলনের জেরে ভাগাড়ে আবর্জনা ফেলা বন্ধ থেকে শুরু করে ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট, এলাকার বাতিস্তম্ভে আলো না থাকার মতো একাধিক সমস্যায় জর্জরিত পানিহাটি। অন্য দিকে, ঠিকাদারদের কয়েক কোটি টাকা বকেয়া থাকায় তাঁরা নতুন করে কাজ করতে চাইছেন না। মিউটেশন ফি এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় বন্ধ থাকায় পুরসভার নিজস্ব কোনও আয় নেই। ফলে, ব্যাঙ্কের স্থায়ী তহবিলে হাত পড়েছে। সেই তহবিল ফুরিয়ে এলে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের প্রাপ্য টাকা কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে সংশয়ে পুর আধিকারিকেরাই।

রাজ্যের ‘এ গ্রেড’ তকমাপ্রাপ্ত পুরসভার এমন হাল কেন, তা জানতেই এ বার খোদ পুরমন্ত্রীকে আসরে নামতে হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। যদিও আগে থেকেই পুরপ্রধান দাবি করে আসছেন, তিনি কোনও ভাবেই এই ব্যর্থতার দায় নেবেন না। বরং তাঁর অভিযোগ, কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দলকে ব্যবহার করে পুরসভায় অচলাবস্থা তৈরি করেছেন। রাজনৈতিক শিবিরের কথায়, ‘‘দলীয় কোন্দলে জর্জরিত পানিহাটির ভবিষ্যৎ কী, সেটাই এখন দেখার।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panihati municipality Panihati

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}