উত্তর দমদম পুরসভার নব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ পর্বের শেষ পর্যায়ে, পুরসভার একমাত্র বিরোধী মুখ, সিপিএমের কাউন্সিলর সন্ধ্যারানি মণ্ডল বুধবার পুষ্পস্তবক তুলে দিলেন নতুন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের হাতে।

এই পুরসভার নির্বাচন ঘিরেই শাসকদলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট, বুথ দখল ও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। আক্রান্ত হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। তাঁরা আক্রান্ত হওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন সাংসদ সৌগত রায়। পানিহাটি ও ঝালদায় পুর প্রতিনিধিদের হত্যার ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি যখন সরগরম, তখন উত্তর দমদমে তরুণ সেনগুপ্ত স্মৃতি ভবনে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ফুটে উঠল রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবি।

এ দিনের অনুষ্ঠানে সাংসদ সৌগত রায় তাঁর ভাষণে পুর প্রতিনিধিদের পরামর্শ দেন, পুর পরিষেবার কাজের পাশাপাশি এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও তাঁদের সচেষ্ট হতে হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস জানান, এমন রাজনৈতিক সৌজন্য ও সংস্কৃতি আগামী দিনেও অটুট রাখতে তাঁরা সচেষ্ট থাকবেন।

যদিও বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, পুর নির্বাচনকে কার্যত প্রহসনে পরিণত করার পরেশপথ গ্রহণের দিন রাজনৈতিক সংস্কৃতির কথা মনে পড়েছে শাসকদলের।

উত্তর দমদমের পুর নির্বাচনে ৩৪টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতে জিতেছে তৃণমূল। শুধু ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন সিপিএম প্রার্থী সন্ধ্যারানি। প্রেক্ষাগৃহে হাজির তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মতে, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিরোধিতা থাকবেই। কিন্তু বছরভর এমন সৌজন্যের ছবিটাও থাকা প্রয়োজন।

এ দিন চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘‘উত্তর দমদমকে একটি মডেল পুরসভা হিসেবে তৈরি করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। পাশাপাশি, এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সকলেই সচেষ্ট হব।’’

তিনি আরও জানান, জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত দেবাশিস ঘোষকে চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য হিসেবে ঠিক করা হয়েছে। বাকি সদস্যদের নাম পরে জানানো হবে।

এ দিন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সৌরভ বসু,
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী প্রমুখ।