Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

শিলান্যাস দু’বছর আগেই, আজও শুরু হল না রাস্তার কাজ 

পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের ৭০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে, ক’দিন আগে জানিয়েছিলেন স্বয়ং জেলাশাসক।

বেহাল: কুলপির তাঁতিরহাট মোড় থেকে আমপোল পর্যন্ত রাস্তা। ছবি: দিলীপ নস্কর

বেহাল: কুলপির তাঁতিরহাট মোড় থেকে আমপোল পর্যন্ত রাস্তা। ছবি: দিলীপ নস্কর

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কুলপি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

কথা ছিল, ইটপাতা রাস্তা দু’টি পিচ রাস্তা করা হবে। সেই মতো শিলান্যাসও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কোনওটিরই কাজ শুরু হয়নি। এ দিকে ফিরে যেতে বসেছে পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা।

পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের ৭০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে, ক’দিন আগে জানিয়েছিলেন স্বয়ং জেলাশাসক। ডায়মন্ড হারবার রবীন্দ্রভবনে জেলার ব্লক স্তর থেকে পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের নিয়ে আয়োজিত ওই বৈঠকে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল, তাদের তহবিলে যেন কোনও টাকা পড়ে না থাকে। কিন্তু তার পরেও এই ছবি।

কুলপি ব্লকের কামারচক পঞ্চায়েতের তাঁতিরহাট মোড় থেকে আমপোল শনিমন্দির পর্যন্ত এবং চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের হাজকি থেকে জগদীশপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তা দু’টি পিচ করার জন্য কয়েক বছর আগেই শিলান্যাস হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোনওটিতেই কাজ শুরু করতে পারেনি পঞ্চায়েত।

কামারচকের তাঁতিরহাট মোড় থেকে আমপোল শনিমন্দির পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার ইটের রাস্তাটি বহু দিন আগে তৈরি। দীর্ঘ দিন ধরে কোনও সংস্কার হয়নি। দেখভালের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে সেটি। কোথাও কোথাও গর্ত তৈরি হয়েছে। সেখানে জল জমছে। রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা নেই। দিনের বেলায় কোনও রকমে যাতায়াত করা গেলেও রাতে এ পথে চলাচল বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

রাস্তাটি দিয়ে চলাফেরা করেন রামনগর, গাজিপুর, কৈখালি, মোল্লার চক, তাজপুর, ঘটিরামপুর-সহ ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ। ওই এলাকার বাসিন্দাদের শিয়ালদহ, কাকদ্বীপ বা নামখানা যাওয়ার ট্রেন ধরতে হলে ওই রাস্তা দিয়েই উদয়রামপুর স্টেশনে যেতে হয়। এ ছাড়াও পাথরপ্রতিমা, রামগঙ্গা, ডায়মন্ড হারবার, কুলপি বা লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশন যেতে হলেও ওই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। পরিবহণের জন্য রয়েছে টোটো, অটো ও অন্য ছোটগাড়ি। কিন্তু ইট রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলতে অসুবিধা হয়। তাই রাস্তাটি পিচ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এ জন্য শিলান্যাস করেন কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার। রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। কিন্তু শুরু হয়নি কাজ।

এ জন্য বিপদে পড়েছেন কামালচক পঞ্চায়েতের প্রধান গোবিন্দ মণ্ডল। এলাকার বাসিন্দারা সমস্ত ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে তাঁর উপরেই। প্রধানের কথায়, ‘‘এ কথা ঠিক, রাস্তা বেহাল হওয়ায় সকলেরই অসুবিধা হচ্ছে। প্রসূতিদের কুলপি হাসপাতালে নিয়ে যেতে গেলে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে। গাড়ি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ছে। সাইকেল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচল করতে গেলেও পিছলে পড়তে হচ্ছে। রাস্তা কাজ শুরুর জন্য ব্লক প্রশাসন থেকে সব স্তরে আমি জানিয়েছি।’’একই অবস্থা পাশের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত এলাকাতেও। ওই পঞ্চায়েতের হাজকি থেকে জগদীশপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ দিন আগে ইট পাতা হয়েছিল। এ রাস্তাটিরও কোনও সংস্কার না হওয়ায় এটিও বেহাল হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তাটি ব্যবহার করেন আকড়াবেড়িয়া, হরিশপুর, রামদেবপুর জগদীশপুর-সহ ৮-১০টি গ্রামের বাসিন্দারা। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সুরভি পুরকাইত বলেন, ‘‘বছর তিনেক আগে এলাকার বিধায়ক রাস্তা পাকা করার জন্য শিলান্যাস করেছিলেন। ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু করার ঠিক আগে মারা যান ঠিকাদার। তারপর আর কাজ শুরু করা যায়নি। এলাকার মানুষ যত ক্ষোভ আমার উপরেই দেখাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে সব স্তরে জানিয়েছি।’’

বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘টেন্ডারের গড়িমসির জন্যই দু’টি ক্ষেত্রেই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। সমস্ত বিষয় জেলা প্রশাসন জানে।’’ কুলপির বিডিও সঞ্জীব সেন বলেন, ‘‘ওই দু’টি রাস্তার কাজ শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা দফতরে জানানো হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kulpi Road Work Development
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy